নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রাবাসে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কোরপান শাহ খুনের মামলায় ধৃত ৯ জন অভিযুক্তকে আগামী ১৩ তারিখ পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। শুক্রবার তাঁদের সকলকেই আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের আইনজীবীরা জামিনের পক্ষে সওয়াল করলেও বিচারক তা খারিজ করে দেন।
এর আগে ওই ঘটনায় পলাতক তিন হবু চিকিত্সকের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল শিয়ালদহ আদালত। আদালতের নির্দেশ হাতে পেয়ে তদন্তকারীরা বুধবার রাতেই এনআরএসের ছাত্রাবাসের বাইরে হুলিয়া জারির নোটিস সেঁটে দেয়।
লালবাজার সূত্রের খবর,পলাতক তিন ছাত্র কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়, নীরজ কুমার এবং রোশন কুমার ওই কলেজের ফাইনাল, চতুর্থ এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কল্যাণের বাড়ি বর্ধমান। বাকি দু’জনের বাড়ি বিহারের বেগুসরাই এবং নালন্দায়। ঘটনার সময় তিন জনই ওই ছাত্রাবাসের আবাসিক ছিল বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। তাঁরা আরও জানান, পলাতক তিন জনের বাড়িতেই স্থানীয় থানার মাধ্যমে হুলিয়ার নোটিস সেঁটে দেওয়া হবে।
গত ১৬ নভেম্বর ভোরে এনআরএস হাসপাতালের ছাত্রাবাসের চতুর্থ তলে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক কোরপান শাহকে থামের সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ ওঠে ওই ছাত্রাবাসের ১২ জন হবু চিকিত্সকের বিরুদ্ধে। মারধরের পরে সেখানেই কোরপানকে ফেলে রেখে এলাকা ছাড়েন তারা। পরে ফোনে খবর পেয়ে এন্টালি থানার পুলিশ কোরপানকে ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্ত শেষে গত ১০ ফেব্রুয়ারি, ঘটনার ৮৬ দিনের মাথায় বিশেষ তদন্তকারী দল তিন পলাতক-সহ ১২ জন হবু চিকিত্সকের বিরুদ্ধে খুন, সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট-সহ একাধিক অভিযোগে শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট জমা দেয়।
লালবাজার সূত্রের খবর, ঘটনার পর থেকেই ওই তিন হবু চিকিত্সক পলাতক। প্রথমে ওই হবু চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে শিয়ালদহ আদালত সমন জারি করে। তাতে হাজিরা না দেওয়াতে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়না জারি করে আদালত। কিন্তু তদন্তকারীরা ওই তিন জনের হদিস না পাওয়ার কথা আদালতে জানালে সোমবার বিচারক পলাতক কল্যাণ, নীরজ এবং রোশনের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারির করার নির্দেশ দেন।