উত্তরবঙ্গ থেকে কাজের সন্ধানে আসা এক তরণীকে প্রথমে হাওড়া ও পরে কলকাতায় এনে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। হাওড়ার গোলাবাড়ি এবং কলকাতার জোড়াবাগানে তাঁকে একাধিক বার গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর পাশাপাশি অভিযোগে ওই তরুণী জানিয়েছেন, জোড়াবাগানের স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে এবং অভিযুক্ত যুবককে স্থানীয় থানায় নিয়ে যান। কিন্তু জোড়াবাগান থানার পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে তাঁকে গোলাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেয়, কারণ তরুণীর বিবরণ অনুযায়ী তিনি প্রথম ওই এলাকাতেই ধর্ষিতা হয়েছেন।
ঠিক কী অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী? হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তরুণীর বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলায়। পারিবারিক অশান্তির জেরে বছর কুড়ির মেয়েটি বাড়ি থেকে পালিয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাওড়া স্টেশনে এসে পৌঁছন। পুলিশ জানায়, হাওড়া বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ইতস্তত ঘুরে বেড়ানোর সময়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ করে আসলাম খান নামে এক যুবক। পুলিশ জানায়, ওই তরুণী আসলামকে সব ঘটনা খুলে বলে তাঁর সাহায্য চান। আসলামও তাঁকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাওড়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে রাখে।
তরুণীর অভিযোগ, এর পরেই আসলাম ও তাঁর বন্ধু তাঁকে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, এর পরে মোটা টাকা আয়ের টোপ দিয়ে মঙ্গলবার তাঁকে কলকাতার জোড়াবাগান থানা এলাকায় দেহ ব্যবসায়ীদের এক দালালের কাছেও নিয়ে যায় আসলাম। পুলিশের কাছে অভিযোগে ওই তরুণী জানিয়েছেন, সেখানেও কয়েক জন তাঁকে ধর্ষণ করে।
পুলিশের দাবি, ওই তরুণী জানিয়েছেন, জোড়াবাগানে ধর্ষিতা হওয়া পরে তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন। তখনই এলাকার বাসিন্দারা তাঁদের ঘিরে ধরেন। আসলাম পালাতে চেষ্টা করলে এলাকাবাসীরাই তাকে ধরে ফেলেন এবং তাঁদের দু’জনকে জোড়াবাগান থানায় নিয়ে যান।
তরুণীর অভিযোগ, জোড়াবাগান থানা ওই তরুণীর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। তাঁদের বক্তব্য, ঘটনার সূত্রপাত যেহেতু হাওড়ার গোলাবাড়ি এলাকায়, তাই সেখানেই আগে জানাতে হবে। এ বিষয়ে ডিসি (নর্থ) বাস্তব বৈদ্য জানান, আইন মেনে তরণীকে উদ্ধার করে তাঁকে নিয়ে জোড়াবাগান থানার পুলিশই গোলাবাড়িতে পৌঁছয় এবং অভিযোগ দায়ের করায়।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরে মঙ্গলবার রাতে ওই তরুণী গোলাবাড়ি থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। তখনই মূল অভিযুক্ত আসলামকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পুলিশ জানায়, বছর পঁচিশের আসলাম হাওড়া বাসস্ট্যান্ড চত্বরে রিকশা চালায়। বুধবার হাওড়া আদালতে তার সাত দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। এ দিনই বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি নথিভুক্ত করেছেন অভিযোগকারিণী।