বাড়ির পথে পিয়ালি সেন। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
আদালতে জামিন পেয়েও মুক্তি পাচ্ছিলেন না তিনি। জামিনদার না-মেলায় বাড়তি তিন দিন তাঁকে থাকতে হয় আলিপুর মহিলা জেলে। শেষ পর্যন্ত সোমবার জামিনদার জুটে যাওয়ায় মুক্তি পেলেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের দ্বিতীয় স্ত্রী পিয়ালি সেন।
প্রথম দফায় পাঁচ, পরের দফায় দু’দিন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতে থাকার পরে কলকাতার নগর দায়রা আদালত ২৫ এপ্রিল পিয়ালিকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়। কিন্তু বিচারকের নির্দেশ অনুযায়ী কলকাতার কোনও বাসিন্দা নিজের স্থাবর সম্পত্তির দলিল আদালতে গচ্ছিত না-রাখায় পিয়ালি ওই দিন ছাড়া পাননি। এ দিন সকালে পিয়ালির আইনজীবী সমীর দাস জানান, জামিনদার এসে আদালতের শর্তমাফিক কাগজপত্র জমা দেন।
আলিপুর মহিলা জেলে জামিনের সেই নথিপত্র পৌঁছয় বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ। মুক্তি পান পিয়ালি। তাঁকে বাড়ি নিয়ে যেতে এসেছিলেন তাঁর ভাই। সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ জেলের মূল ফটক থেকে সারদা-প্রধানের স্ত্রী সবুজ-সাদা ওড়নায় মুখ ঢেকে বেরোতেই সংবাধমাধ্যম তাঁকে ঘিরে ধরে। বেগতিক দেখে জেল-চত্বরে রাখা একটি গাড়ির পিছনে লুকিয়ে পড়েন তিনি। ভাইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের সব প্রশ্নের উত্তরে তিনি কেবল হাত ও মাথা নাড়িয়ে কথা বলতে না-চাওয়ার ইঙ্গিত করতে থাকেন। ইতিমধ্যে তাঁর ভাই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিপুর ক্যাম্পাসের সামনে থেকে ট্যাক্সি ডেকে আনেন। জেল-চত্বর পেরিয়ে বড় রাস্তায় দাঁড়ানো ট্যাক্সিতে ওঠার সময়েও পিয়ালের মুখ ঢাকা ছিল ওড়নায়।
এর পরে পার্ক সার্কাস উড়ালপুল, চার নম্বর ব্রিজ, সায়েন্স সিটি, ই এম বাইপাস, ভিআইপি রোড হয়ে সন্ধ্যা সওয়া ৭টা নাগাদ পিয়ালির ট্যাক্সি নারায়ণতলায় (পূর্ব) পৌঁছয়। জেল থেকে বাড়ি পর্যন্ত যাত্রাপথের পুরোটাই পিয়ালিকে এ দিন মাথা নিচু করে ট্যাক্সিতে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। নারায়ণতলায় একটি বহুতল আবাসনের সামনে ট্যাক্সি দাঁড়ায়। দ্রুত ভাইয়ের হাত ধরে ট্যাক্সি থেকে নেমে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়েন সারদা-প্রধানের স্ত্রী।