এনআরএসের ছাত্রাবাসে কোরপান শাহকে খুনের ঘটনায় লালবাজারের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) হাতে গ্রেফতার হওয়া দুই আবাসিককে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। অরবিন্দ মাঝি ও অভিষেক কুমার নামে ওই দু’জনকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়।
লালবাজার সূত্রে খবর, অরবিন্দ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অভিষেক ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছিলেন। এর আগে এই ঘটনায় পাঁচ আবাসিক-সহ সাত জন গ্রেফতার হয়েছিলেন।
অরবিন্দ ও অভিষেককে ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্য বিচারকের এজলাসে শুক্রবার হাজির করায় পুলিশ। ধৃতদের আইনজীবী দাবি করেন, ঘটনার দিন অভিষেক ডিউটিতে ছিলেন। খুনের সঙ্গে তাঁর যোগ নেই। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। সরকারি আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে জানান, কোরপানকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় ওই দু’জন সরাসরি যুক্ত ছিলেন। পরে বিচারক ওই দু’জনের জামিনের আবেদন খারিজ করে তাঁদের সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
অভিষেককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, এই অভিযোগে এ দিন বিকেলে হাসপাতালের অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান জনা কুড়ি মেডিক্যাল পড়ুয়া। তাঁদের দাবি, অভিষেক নির্দোষ। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে ওই বিক্ষোভ উঠে যায়।
পুলিশের দাবি, প্রথম বর্ষের ধৃত ছাত্র জসিমুদ্দিনের পাশের ঘরে থাকতেন অরবিন্দ। কোরপানকে ছাত্রাবাসে দেখে জসিমুদ্দিন চিৎকার করলে অরবিন্দই প্রথমে এসে কোরপানকে মারধর শুরু করেন। পরে অন্যেরা এসে কোরপানের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গত ১৬ নভেম্বর সকালে এনআরএসের ছাত্রাবাস থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কোরপানকে। পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারেন ছাত্রাবাসের এক দল আবাসিক। ঘটনার এক মাস পরে জসিমুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পরে গ্রেফতার হন ক্যান্টিনের দুই কর্মী। লালবাজার সূত্রে খবর, জসিমুদ্দিনের গোপন জবানবন্দি ও ধৃত ক্যান্টিনকর্মীদের জেরা করে জাভেদ আখতার, অনুরাগ সরকার, ইউসুফ জামাল ও অরিজিৎ মণ্ডল নামে চার জন ছাত্রকে গ্রেফতার করে সিট। জাভেদ, অনুরাগ, অরিজিৎ ওই মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ও ইউসুফ চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র।