কোরপান শাহ
এনআরএস-কাণ্ডের পর ১৯ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু মানসিক প্রতিবন্ধী কোরপান শাহ খুনে কোনও সন্দেহভাজনকে জেরাটুকুও করা হয়নি। উপরন্তু অভিযোগ, শাসক দলের বাধায় কার্যত থমকেই রয়েছে তদন্ত। এই অবস্থায় বিষয়টিকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যেতে নয়াদিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘আক্রান্ত আমরা’ নামে একটি সংগঠন। যার আহ্বায়ক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অম্বিকেশ মহাপাত্র। তৃণমূলের আমলে বিভিন্ন সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন এমন মানুষদের নিয়ে তৈরি ‘আক্রান্ত আমরা’ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জাতীয় মহিলা কমিশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনেও যাবে তারা। রবিবার ৫৫ জনের প্রতিনিধি নিয়ে দিল্লিতে যাওয়ার কথা ওই সংগঠনের।
গত ১৬ নভেম্বর নীলরতন সরকার হাসপাতালের হস্টেলে খুন হন মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক কোরপান শাহ। অভিযোগের আঙুল ওঠে কিছু হবু চিকিৎসকের দিকে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। উল্টে অভিযোগ, শাসক দলের একাংশ অভিযুক্তদের পরিচয় গোপন রাখতে চেষ্টা চালাচ্ছে। শুক্রবার অম্বিকেশবাবু জানান, বিষয়টি সবার নজরে আনতেই যন্তরমন্তরে ধর্না দেবে ‘আক্রান্ত আমরা’। বিভিন্ন জাতীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের ধর্নামঞ্চে থাকতে আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। তবে যাঁর মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে এই ধর্না, সেই কোরপান শাহ-র স্ত্রী সন্তান সম্ভবা হওয়ায় দিল্লি যেতে পারবেন না। তবে তাঁর পরিবারের দুই সদস্য অম্বিকেশবাবুদের সঙ্গে দিল্লি যাচ্ছেন।
এ দিন ওই সংগঠনের ডাকা সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন গাইঘাটায় নিগৃহীতা নবম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা, বালিতে নিহত তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দেবীও। দু’জনেই জানিয়েছেন, ন্যায়বিচারের আশায় তাঁরা দিল্লি যাচ্ছেন। মামলা তোলার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন গাইঘাটায় নিগৃহীতা নবম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা। রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান তথা রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি অবসরপ্রাপ্ত নপরাজিত মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়েও সরব হয় আক্রান্তদের পরিবারগুলি। কমিশনের চেয়ারম্যান পদে কী ভাবে নপরাজিতবাবুকে নিয়োগ করা হল সেই প্রশ্ন তুলে অম্বিকেশবাবু বলেন, “কমিশন কোনও কাজ করছে না। তাই আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যেতে হচ্ছে।” এ নিয়ে নপরাজিতবাবুকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিরক্ত হয়ে বলেন, “এত রাতে ফোন করেছেন কেন? মন্তব্য করব না।”