রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ‘টেট’ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করলেন রাহুল গাঁধী। শনিবার মালদহের সামসি কলেজ মাঠে সারদা কাণ্ডের সঙ্গেই টেট পরীক্ষার প্রসঙ্গও তোলেন কংগ্রেসের সহ সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের কেন্দ্রীয় বিধি না মেনেই রাজ্যে নিয়োগ হয়েছে। তাই যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে বলে সভায় রাহুল দাবি করেছেন।
এ দিন কলেজ মাঠের সভায় সারদা প্রসঙ্গে রাজ্যকে একহাত নেওয়ার পরেই রাহুলের সংযোজন, “রাজ্যে ৩৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনিয়ম হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রের কেন্দ্রীয় বিধিনিষেধ কিছুই মানেনি রাজ্য সরকার। তৃণমূল নিজেদের ৩৫ হাজার লোককে চাকরি দিয়েছে। ফলে যারা যোগ্য তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন।”
গত বছরের ৩১ মার্চ মাসে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে ৩৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগের কথা জানানো হয়েছিল। টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন প্রায় ৪৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী। গত বছরের শেষের দিকে নিয়োগের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হতেই রাজ্য জুড়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
নানা মহল থেকে দাবি ওঠে, বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল নেতাদের আত্মীয়-পরিজনদের নিয়োগের প্যানেলে নাম রয়েছে। বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বেশ কয়েকটি সংগঠনও নিয়োগে অনিময়ের দাবিতে বিভিন্ন জেলায় সে সময় আন্দোলন করে। যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পায়নি বলে অভিযোগ করে এ দিনের সভায় রাহুল গাঁধীর মন্তব্য, “এরাই (রাজ্য সরকার) বড় বড় কথা বলে। অথচ, গরিবের জন্য, যোগ্যদের জন্য কাজ হয় না।”
এ দিন টেট পরীক্ষায় অনিয়মকে সামনে রেখে প্রচার করেন বাম নেতারাও। জঙ্গিপুরে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র দলের কর্মীদের সারদা কাণ্ড, নারী নির্যাতনের সঙ্গে টেট কেলেঙ্কারি নিয়েও প্রচারে নামতে বলেন। সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, “এ বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছি। যারা তৃণমূল করছে, কেবল তারাই চাকরি পাচ্ছে। এটা হচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। নির্বাচনের পরে এ নিয়ে আন্দোলন শুরু হবে।”
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “এআইসিসি সহ সভাপতি প্রদেশ কংগ্রেসের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রাজনৈতিক মন্তব্য করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের তাঁকে এটাও জানানো উচিত ছিল, প্রাথমিকের টেট নিয়ে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে একটা মামলা করেছিলেন। মহামান্য বিচারপতি সেই মামলায় রায় দেন, প্রদেশ কংগ্রেসের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, এবং মিথ্যা মামলা করে আদালতকে বিভ্রান্ত করার জন্য মহামান্য বিচারপতি প্রদেশ কংগ্রেসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ও মামলা খারিজ করে দেন। এআইসিসির সহ সভাপতি প্রদেশ কংগ্রেসের কাছ থেকে এই মামলার ফল জেনে মন্তব্য করলে ভাল হত।”