ইতিহাসের বই নিয়ে ফের মত চাওয়ায় বিতর্ক

অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ে ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ’ অধ্যায় নিয়ে বিতর্ক বেধেছিল। সেই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে চার প্রবীণ শিক্ষকের মতামত নেয় রাজ্য সরকার। তাঁদের সুপারিশের ভিত্তিতে অধ্যায়টি ইতিমধ্যে পরিমার্জনও করা হয়েছে। এ বার নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে এই বিষয়ে সরকারের অন্য একটি সিদ্ধান্তে। পরিমার্জিত অধ্যায়টি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে দিয়ে ফের শিক্ষানুরাগীদের অভিমত চাওয়া হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে সরকার এই ব্যাপারে প্রবীণ শিক্ষকদের মত নিয়েছিল কেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০১
Share:

অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস বইয়ে ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ’ অধ্যায় নিয়ে বিতর্ক বেধেছিল। সেই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে চার প্রবীণ শিক্ষকের মতামত নেয় রাজ্য সরকার। তাঁদের সুপারিশের ভিত্তিতে অধ্যায়টি ইতিমধ্যে পরিমার্জনও করা হয়েছে।

Advertisement

এ বার নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে এই বিষয়ে সরকারের অন্য একটি সিদ্ধান্তে। পরিমার্জিত অধ্যায়টি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে দিয়ে ফের শিক্ষানুরাগীদের অভিমত চাওয়া হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে সরকার এই ব্যাপারে প্রবীণ শিক্ষকদের মত নিয়েছিল কেন?

বইটির ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ’ শীর্ষক অধ্যায়ে ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকীদের রাখা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয় কয়েক মাস আগে। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, ওই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলা হচ্ছে কেন? তাঁদের যুক্তি ছিল, এখন যে-অর্থে ‘সন্ত্রাসবাদ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়, তাতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওই সংজ্ঞায় ফেলা যায় না। অল্পবয়সি পড়ুয়ারা এতে বিভ্রান্ত হবে। বরং অধ্যায়টির নাম হওয়া উচিত ‘বিপ্লবী জাতীয়তাবাদ’। আবার ইতিহাসবিদদেরই অনেকে ব্যাখ্যা দেন, ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকীরা যখন স্বাধীনতা আন্দোলন করেছিলেন, তখনকার নিরিখে তাঁদের বিপ্লবকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলা যেতেই পারে।

Advertisement

সব্যসাচী ভট্টাচার্য, বিনয়ভূষণ চৌধুরী, সুজাতা মুখোপাধ্যায় ও হিমাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিহাসের এই চার প্রবীণ শিক্ষক-শিক্ষিকার মতামত চায় রাজ্য। সম্প্রতি তাঁরা নিজের নিজের মত জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরে। সরকারি পাঠ্যক্রম কমিটি সূত্রের খবর, তাঁদের মধ্যে তিন জন ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ’ শিরোনাম সমর্থন করেছেন। চতুর্থ জন সরাসরি সমর্থন না-করে এই নামকরণের পিছনে কিছু বিশ্লেষণ যোগ করেছেন।

চার শিক্ষক-শিক্ষিকার মতামত জেনে নিয়ে অধ্যায়টি পরিমার্জন করে কিছু বিশ্লেষণ যোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাঠ্যক্রম কমিটির ওই সূত্র। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় জানান, পরিমার্জিত অধ্যায়টি পর্ষদের ওয়েবসাইটে দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষানুরাগীদের মত চাওয়া হয়েছে।

কিন্তু বিশিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পরামর্শ নেওয়ার পরে আবার ওয়েবসাইটে সকলের মত চাওয়া হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে পাঠ্যক্রম কমিটির মধ্যেই। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য জানান, কাউকে অসম্মান করার কোনও উদ্দেশ্য তাঁদের নেই। তিনি বলেন, “চার ইতিহাসবিদের মতামত হুবহু এক নয়। তাই আরও শিক্ষানুরাগীর কাছে মতামত চাওয়া হচ্ছে।” যদিও চার জন প্রবীণ শিক্ষক-শিক্ষিকা হুবহু এক কথা না-বললেও ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ’ কথাটির বিরোধিতাও করেননি বলে পাঠ্যক্রম কমিটি সূত্রের খবর।

শিক্ষানুরাগীদের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার কাজ চলবে এক সপ্তাহ ধরে। সেগুলি দেখেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান মন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement