তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেবাশিস আচার্যকে। বৃহস্পতিবার।—নিজস্ব চিত্র।
যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চড় মারায় অভিযুক্ত দেবাশিস আচার্যের আদালতে হাজিরা নিয়ে দিনভর টানাপড়েন চলল। এসএসকেএম হাসপাতাল ওই যুবককে এ দিন সুস্থ বলে ছেড়ে দিলেও পূর্ব মেদিনীপুরে নিয়ে গিয়েই তাঁকে ভর্তি করানো হল তমলুক জেলা হাসপাতালে। অসুস্থতার কারণ দর্শিয়ে পুলিশ দেবাশিসকে আদালতে তোলেনি। শেষমেশ তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে পিজিতেই।
পূর্ব মেদিনীপুরের এসপি সুকেশ কুমার জৈন বলেন, “এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানান, দেবাশিস সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তমলুকে আনার পরে তাঁর কিছু সমস্যা ধরা পড়ে। তাই আর তাঁকে আদালতে তোলা যায়নি।”
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ দিন এসএসকেএম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় দেবাশিসকে। তবে তমলুকে এনেই তাঁকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে দেবাশিসের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক শৈবাল মাইতি বলেন, “ওই যুবকের হাতে-পায়ে ব্যথা ছিল। উনি ঠিক মতো দাঁড়াতে পারছিলেন না।” চিকিৎসকের রিপোর্ট তমলুক আদালতে জমা দিলে বিচারক জানান, অভিযুক্ত সুস্থ হলে যেন তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। বিকেলে দেবাশিসকে ফের এসএসকেএমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
দেবাশিসের শরীরের অবস্থা যখন এতই খারাপ তাহলে তাঁকে এসএসকেএম থেকে ছাড়া হল কেন?
এসএসকেএমের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র অবশ্য বলেন, “ওই যুবক শারীরিক ভাবে সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন। সে জন্যই চিকিৎসকেরা তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে সে কথা জানা মাত্র দেবাশিস বলতে শুরু করেন, ‘হাতে-পায়ে ব্যথা হচ্ছে’। মনে হয় ওঁর মানসিক সমস্যা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”
৪ জানুয়ারি চণ্ডীপুরে প্রকাশ্য সভামঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেককে চড়-ঘুষি মারার পরে গণপিটুনিতে জখম হন দেবাশিস। সেই ঘটনায় দেবাশিসের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা হয়েছে। তা প্রত্যাহারের জন্য তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দরবার করেছেন দেবাশিসের বাবা-মা। শিবানীদেবী এ দিন বলেন, “ছেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তুলে নিতে আমরা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তাঁরা এ বিষয়ে আগামী রবিবার আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।” কলকাতার কাউন্সিলর তথা যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন বলেন, “তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশেই ওই যুবকের বাবা-মাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।”