ভালবাসার পড়া ছেড়ে বিড়ি বাঁধতে হত, মালদহে আত্মঘাতী কিশোরী

দু’বছর ধরে পড়াশোনা বন্ধ ছিল। মাম্পি বারবারই তাকে আবার স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য বাবা-মা’কে বলেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০১
Share:

শোকার্ত: মৃত কিশোরীর মা ও পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

মাধ্যমিক পাস করেছিলেন দ্বিতীয় বিভাগে। চেয়েছিলেন আরও পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে। কিন্তু দু’বছরের মধ্যে তেমন সুযোগ আর মেলেনি। স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে বসে বিড়ি বাঁধতে হত। মাম্পি চৌধুরী (১৮) নামে সেই কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে রবিবার ভোরে। মালদহের কালিয়াচক রাজনগর গ্রামের মাম্পির বাবা অজিত চৌধুরী বলেন, ‘‘মাম্পির খুবই পড়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু আমি পড়াতে পারিনি। সেই কারণেই ও আত্মহত্যা করল বলে মনে হচ্ছে।’’

Advertisement

দু’বছর ধরে পড়াশোনা বন্ধ ছিল। মাম্পি বারবারই তাকে আবার স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য বাবা-মা’কে বলেছিল। সহপাঠিনীরা আর ক’দিন পরে কলেজে ভর্তি হবে। সেখানে মাম্পির দিন কাটত বিড়ি বেঁধে আর বাড়ির কাজ করে। পড়ার সব পথ বন্ধ মনে করেই মাম্পি অভিমানে আত্মহত্যা করেছে বলে তাঁর প্রতিবেশীদেরও ধারণা।

অভাবের সংসারের জন্যই মেয়ের কথা রাখা যায়নি বলে জানিয়েছেন অজিতবাবু। তিনি নিজে খুবই অসুস্থ। তাঁর পাঁচ ছেলেমেয়ে। মাম্পির এক দাদা ভিন্ রাজ্যে কাজ করেন। বাড়ির বাকি সকলেই বিড়ি বাঁধেন। সেই আয় দিয়েই চলে সংসার। অজিতবাবুর বক্তব্য, মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারতেন কিন্তু তার পড়ার অন্য খরচ বহন করতে পারতেন না।

Advertisement

আরও পড়ুন: বুকের উপরে চেপে বসে তিন বছরের ভাইপোকে খুন!

পরিবারের দাবি, শনিবার বিকেলে বাড়িতে রাখা অ্যাসিড খেয়ে নেয় মাম্পি। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। রবিবার ভোরে সেখানেই মারা যান মাম্পি। মাম্পি কন্যাশ্রীর টাকা পায়নি বলে দাবি করেছেন অজিতবাবু। স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কন্যাশ্রীর টাকা ওই কিশোরীর প্রাপ্য। যদি সে না পেয়ে থাকে, কেন পায়নি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement