শিশুকন্যাকে নিয়ে বাগনান স্টেশনে ঘণ্টাখানেক ছিলেন রিঙ্কা মণ্ডল। দাবি প্রত্যক্ষদর্শী ট্রেনযাত্রীদের। —নিজস্ব চিত্র।
শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ঘণ্টাখানেক ধরে বাগনান স্টেশনের একটি প্ল্যাটফর্মে ঘোরাঘুরি করছিলেন এক তরুণী। আচমকাই শিশুকে নিয়ে চলন্ত মালগাড়ির সামনে ঝাঁপ দেন তিনি। মালগাড়ির ধাক্কায় দু’জনেরই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন বলে রেলপুলিশের কাছে জানিয়েছেন বাগনান স্টেশনের বহু যাত্রী। পারিবারিক অশান্তির জেরেই কি এই চরম পথ বেছে নিলেন ওই তরুণী? তা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর শাখার বাগনান স্টেশনে মৃতদের নাম রিঙ্কা মণ্ডল (৩২) এবং তাঁর শিশুকন্যা রিমি মণ্ডল (৬)। শ্যামপুরের নাউলের বাসিন্দা রিঙ্কা সেখানকার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ বাগনান স্টেশনের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি চলন্ত মালগাড়ির সামনে শিশুকন্যাকে নিয়ে ঝাঁপ দেন ওই তরুণী। ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনের উপর ছিটকে পড়েন তাঁরা। ট্রেনের নীচে ঢুকে যায় শিশুটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। অরবিন্দ নস্কর নামে এক ট্রেনযাত্রী বলেন, ‘‘ঘটনার আগে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় ধরে বাগনান প্ল্যাটফর্মে ছিলেন দু’জন।’’
পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’জনকে উদ্ধার করে প্রথমে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় জিআরপি। সেখান থেকে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, রিঙ্কাদের বাড়ি লাগোয়া একটি চায়ের দোকান চালান তাঁর স্বামী। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ রিমিকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বার হয়েছিলেন রিঙ্কা।
কী কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছেন বাগনান রেলপুলিশের আধিকারিকেরা। তবে পারিবারিক বিবাদের জেরেই এই ঘটনা বলে প্রাথমিক অনুমান অনুমান পুলিশের।