—ফাইল চিত্র।
হাউ ইজ দ্য খওফ। অর্থাৎ, কেমন ভয় লাগছে? মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় যোগীর সভার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে এমনই টুইট করে বিজেপি। উত্তরে ধর্না মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে ওঁর কোথাও দাঁড়ানোর জায়গা নেই, তাই বাংলায় এসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’’
বস্তুত, এ দিন পুরুলিয়ায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভা হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট ‘ভয়’এ ছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। উত্তরবঙ্গের পর তাঁর বাঁকুড়ার সভাও বাতিল করতে হয়েছে দলকে। তবে শেষ পর্যন্ত অনুমতি ছাড়াই পুরুলিয়ার সভার আয়োজন করা হয়। যোগীও আসতে সম্মত হন। তবে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, বিনা অনুমতিতে সভা করার জন্য যোগী-সহ বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
অন্য দিকে, ঠাকুরনগর থেকেশিক্ষা নিয়ে ৮ তারিখ জলপাইগুড়িতে প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তার বলয় তৈরি করছে এনএসজি।
মঙ্গলবার নির্ধারিত সময়ের বেশ খানিকক্ষণ পর সভায় পৌঁছন যোগী। পুরুলিয়ায় কপ্টার নামার অনুমতি না পাওয়ায়এ দিন ঝাড়খন্ডের বোকারোয় নেমে সড়ক পথে পুরুলিয়ায় পৌঁছন যোগী। এসেই তাঁর হুঙ্কার, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে স্বৈরতান্ত্রিক সরকার চলছে। অমিত শাহকে সভার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আমার হেলিকপ্টার নামার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সড়কপথে এসেছি। আমি বলেছিলাম আসব। এসে দেখিয়েছি।’’
রাজ্য সরকার বিজেপিকে সভা করতে দিচ্ছে না, এই অভিযোগের উত্তর এ দিন ধর্না মঞ্চ থেকেই দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘কে বলেছে এখানে বিজেপিকে সভা করতে দেওয়া হয় না। মোদী মিটিং করেছে। রাজনাথ মিটিং করেছে। যোগী-ভোগীও আসছে। এমনকি, সোয়াইন ফ্লু নিয়েও কেউ কেউ এসে সভা করে গিয়েছেন’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘‘যোগীকে বলুন ওঁর নিজের রাজ্যের দিকে প্রথমে নজর দিতে। ওখানে কত মানুষ মারা যাচ্ছেন। পুলিশকে পর্যন্ত খুন করা হচ্ছে। গণপিটুনিতে কত লোক মারা গিয়েছেন। উনি এখন ভোটে দাঁড়ালে হেরে যাবেন।’’
উত্তরে যোগী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমি না কি উত্তরপ্রদেশ সামলাতে পারছি না। শুনে রাখুন, উত্তরপ্রদেশ ভাল ভাবেই সামলানো হচ্ছে। যে দিন বিজেপির সরকার বাংলায় ক্ষমতায় আসবে, তৃণমূলের গুন্ডারা গলায় ‘পট্টা’ আটকে চলবে। ঠিক যেমন উত্তরপ্রদেশে এখন সপা ও বসপার গুন্ডারা পট্টা লাগিয়ে চলছে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি শাসিত সরকারের জন্য গুন্ডারা আজ প্রাণ ভিক্ষা চাইছে।’’
পঞ্চায়েত ভোটের প্রসঙ্গ তুলে যোগীর মন্তব্য, ‘‘বিজেপি এবং অন্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপরে যে ধরনের নির্মম অত্যাচার হয়েছে তাতে গণতন্ত্র রক্ষা করাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ এর আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ কিংবা মোদীরাও একই অভিযোগ করেছেন।
বস্তুত, গত ২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরনগর ও দুর্গাপুরে এসে মমতাকে সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন মোদী। আগামী ৮ তারিখ তাঁর জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে সভা করতে আসার কথা। ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। জলপাইগুড়ির এক জেলা শাসকের কথায়, ‘‘এসপিজির কর্তারা মেনে নেন, ঠাকুরনগরের সভায় পদপিষ্ট হয়ে বহু লোকের মৃত্যুর আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই সভায় তেমনটা যাতে না হয়,সে জন্য পুলিশকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’৫০টি দরজায় তল্লাশির ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। সভামঞ্চের পাশে যেতিনটি হেলিপ্যাড তৈরি হচ্ছে,তা তদারকি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে। আজ, বুধবার থেকে সেই হেলিপ্যাডে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার ওঠা-নামার মহড়া শুরু হবে।