প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে নানান প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন এক ছাত্র। তাঁর অভিযোগ, তিনি ‘নিম্নবর্ণের’ হওয়ায় তাঁকে কয়েক জন শিক্ষক বিভিন্ন উপায়ে হেনস্থা করছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে সে কথা জানালেও কী ভাবে আইনি পদক্ষেপ করবেন তা বুঝতে পারছেন না ওই ছাত্র। প্রশাসনের খবর, শুধু ওই ছাত্র নন, পুলিশ-প্রশাসনের অনেকেই নতুন তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইন সম্পর্কে অবহিত নন। তার জেরে বহু সময়েই এই ধরনের ঘটনায় যথাযথ মামলা রুজু করা হয় না।
লালবাজারের খবর, এই আইনের বাহিনীর আধিকারিকদের প্রশিক্ষিত করতে সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ ধরে এসি, ওসি ও সিনিয়র সাব-ইনস্পেক্টর পদের আধিকারিকদের নিয়ে দফায় দফায় কর্মশালা হয়েছে। আলিপুর আদালতের মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি রাধানাথ মুখোপাধ্যায়-সহ অভিজ্ঞ আইনজীবী সেখানে ক্লাস নিয়েছেন। আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও বর্ণ-জাতি বিদ্বেষ দূর হয়নি। বহু ক্ষেত্রে তথাকথিত শিক্ষিত, প্রগতিশীলেরা ‘নিম্নবর্ণের’ মানুষদের নানান ভাবে নিপীড়ন করেন। তদন্তের ক্ষেত্রেও যাতে সেই বর্ণ-জাতি ভেদ বা বিদ্বেষমূলক মানসিকতা প্রভাব না-ফেলে তা নিশ্চিত করতে হবে।
সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, তফসিলি জাতি ও জনজাতি আইনে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়। ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনে সাব-ইনস্পেক্টর পদের আধিকারিক তদন্তকারী অফিসার হলেও এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম ডিএসপি বা সহকারী কমিশনার (এসি) পদের অফিসারই তদন্তকারী আধিকারিক হতে পারেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার না-করলে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, তা আদালতকে জানাতে হয়। এই মামলায় অভিযুক্ত হলে আগাম জামিনের আর্জি জানানো যায় না। তাই সব সময় তদন্তকারী অফিসার তড়িঘড়ি গ্রেফতার নাও করতে পারেন। কিন্তু সেটাও আদালতকে সবিস্তার জানাতে হবে। সাধারণত, মামলা রুজুর ৬০ দিনের মধ্যে এর চার্জশিট বা ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চার্জশিট জমা না-দিতে পারলে তা আদালতকে জানিয়ে মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি নিতে হয়। এই সংক্রান্ত মামলার বিচারের পৃথক আদালতও তৈরি করা হয়েছে। এই কর্মশালার অন্যতম প্রশিক্ষক শিয়ালদহ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আইনের যথাযথ প্রয়োগ যাতে হয় সেটাই আমরা চাই। তাই আধিকারিকদের সবিস্তারে ব্যাপারগুলি শেখানো হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: অফিসে কম, রাস্তায় যান বেশি, কর্মীদের বলছে এখন সিপিএম