—প্রতীকী ছবি।
সমাজ মাধ্যমে বন্ধুত্ব, তা থেকে প্রেম। প্রেমিকের টানে নিয়মের পরোয়া না করে কাঁটাতার পেরিয়ে সোজা বর্ধমান শহরে। তার পরে শরিয়তি আইন মেনে বিয়ে। বেশ চলছিল জীবন। কিন্তু চার মাসের মাথায় খবর গেল পুলিশের কাছে। আপাতত বর্ধমানের সংশোধনাগারে ঠাঁই হয়েছে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের ওই তরুণী নুরতাজ আখতার মিম (নাম পরিবর্তিত নাম) ও তাঁর স্বামী শেখ শামিমের।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর পুজোর পরে ওই দু’জনের আলাপ হয়। প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মার্চে নারায়ণগঞ্জ থেকে বনগাঁ সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে এ দেশে ঢুকে পড়েন ওই তরুণী। সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান শহরে নিয়ে আসেন শামিম। পুলিশের দাবি, ওই দম্পতি তাঁদের জানিয়েছেন, ‘দালালের’ মাধ্যমে সীমান্ত পার হয়েছিলেন। তার পরে সব কিছু ‘ঠান্ডাই’ ছিল। কিন্তু গত ২৪ জুন ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি ট্র্যাফিকিং কমিটির’ চেয়ারম্যান শেখ জিন্নার আলির কাছ থেকে পুলিশ খবর পায়, বাংলাদেশ থেকে একটি মেয়ে পালিয়ে এসে বর্ধমানের তেঁতুলতলায় এক যুবকের আশ্রয়ে রয়েছেন।ওই তরুণীর কাছে ভারতে আসার কোনও নথিপত্র নেই। তাঁকে পাচার করে নিয়ে আসা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ওই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ তেঁতুলতলায় অভিযান চালিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, তরুণীর কাছে ভারতে আসার কোনও নথি মেলেনি। তবে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে তাঁর বিয়ে ঠিক করা হচ্ছিল। বর্ধমানের ছেলেটির সঙ্গে তাঁর বাড়ির লোক বিয়ে দিতে রাজি ছিলেন না। সে কারণেই ঘুরপথে বাংলাদেশ থেকে সোজা বর্ধমানে আসার পরিকল্পনা করেন ওই দু’জন। জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে পালিয়ে তরুণী প্রথমে নারায়ণগঞ্জে আসেন। সেখান থেকে পদ্মা-সেতু পেরিয়ে যশোর। তার পরে বনগাঁ সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢোকেন। মার্চে বর্ধমানে এসেই বিয়ে করেন তাঁরা।
অভিযুক্ত যুবক পেশায় একটি মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগকারী সংস্থার কর্মী। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করে তাঁদের গ্রেফতার করেছে। রবিবার ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। ‘ন্যাশনাল অ্যান্টি ট্র্যাফিকিং কমিটির’ চেয়ারম্যানের দাবি, ‘‘প্রেম, বিয়ের গল্প ফাঁদা হচ্ছে। আসলে পাচার করাটাই মূল উদ্দেশ্য।’’