ছবি:সংগৃহীত।
বছর আটত্রিশের মহিলাটি দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। কয়েক পা হাঁটলেই হাঁপিয়ে উঠছিলেন, শ্বাস নিতেও সমস্যা হচ্ছিল। চিকিৎসকেরা জানান, প্রসবকালে মহিলার শরীরস্বাস্থ্যের কিছু ঝুঁকি রয়েছে। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন মঞ্জুরা বিবি নামে কল্যাণীর ওই মহিলা। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত তিনি অবশ্য সুস্থ ভাবেই সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ডাক্তারেরা পরীক্ষা করে দেখেন, ওই রোগিণীর হৃদ্যন্ত্রে পাম্পিংয়ের সমস্যা আছে। ফুসফুসে জল জমে যাচ্ছে। গর্ভাবস্থায় হৃদ্যন্ত্রে এ ধরনের সমস্যা থাকলে প্রসবকালে প্রসূতির হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। গর্ভস্থ শিশুর যথাযথ শারীরিক গঠনের জন্যও মায়ের হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক থাকা জরুরি।
মঞ্জুরাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, শারীরিক পরীক্ষার পরে তাঁরা ঠিক করেন, কিছু দিন ওষুধের সাহায্যে প্রসূতির হৃৎপিণ্ডের সঙ্কোচন-প্রসারণ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হবে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির পরেই তাঁর প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়। তাই হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক করার জন্য ওষুধের সাহায্য নেওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়নি। হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞেরা একসঙ্গে মঞ্জুরার চিকিৎসা চালান। হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রসবকালে ওষুধের সাহায্যে হার্টের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মনিটরে সারা ক্ষণই পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছিল। ‘‘চিকিৎসকের উপরে রোগীর ভরসা থাকলে কঠিন পরিস্থিতিরও মোকাবিলা করা যেতে পারে। ওই মহিলাকে সুস্থ করতে পেরে ভাল লাগছে,’’ বললেন শুভ্রবাবু।