এ ভাবেই হাত-বাঁধা অবস্থায় সিলিং থেকে ঝুলছিলেন তরুণী। —নিজস্ব ছবি।
ঘরের দরজা একটু ফাঁক করে খোলা। সামনের বারান্দায় খেলছে চার বছরের এক শিশু। প্রথমে হোটেলকর্মীদের কোনও সন্দেহ হয়নি। কিন্তু তাঁদের দেখেই দরজা ঠেলে শিশুটি ঘরে ঢুকে যায়। দরজা হাট করে খোলা। আর তখনই হোটেলকর্মীদের চোখে পড়ে, ঘরের মধ্যে খাটের ঠিক উপরে সিলিং পাখা থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে এক তরুণীর দেহ। সামনের দিকে করে হাত বাঁধা তাঁর।
বুধবার সকালে খবর পেয়েই নিউ দিঘার ওই হোটেলে পৌঁছয় পুলিশ। ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই তরুণী মঙ্গলবার বিকেলে দিঘার সরকারি বাস ডিপোর উল্টো দিকের ওই হোটেলে ওঠেন। হোটেলে জমা দেওয়া আধার কার্ডের তথ্য অনুযায়ী, বছর কুড়ির ওই তরুণীর নাম পিয়ালি দেড়ে। বাড়ি ডানকুনির হেমনগর ক্ষুদিরাম পল্লিতে।
পুলিশ হোটেলের কর্মীদের জেরা করে জানতে পেরেছে, ওই তরুণী একাই তাঁর চার বছরের ছেলেকে নিয়ে হোটেলে উঠেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে অন্য কেউ ছিলেন না। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ নিশ্চিত যে, খুন করা হয়েছে ওই তরুণীকে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘কেউ আত্মহত্যা করলে নিজের হাত বেঁধে গলায় ফাঁস লাগাতে পারেন না। তরুণীর দু’হাত জড়ো করে একটি রুমাল দিয়ে বাঁধা ছিল।” তদন্তকারীদের দাবি, খাটের উপর থাকা তোষক সরিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে তরুণীর পা খানিকটা শূন্যে থাকে। না হলে পা মাটিতে ঠেকে যাচ্ছিল। আততায়ীই বিছানা সরিয়ে শ্বাসরোধের ব্যবস্থা করেছে বলেই তাঁদের অনুমান।
আরও পড়ুন: লাইভ: বিজেপির যুব মোর্চার পুরসভা অভিযানে ধুন্ধুমার, চাঁদনি চকে জলকামান
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, পরিচিত কেউ তরুণীর সঙ্গে রাতে দেখা করতে এসেছিল। সে-ই আততায়ী। কিন্তু ওই হোটেলে কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকায় কখন কে এসেছিল তা নিয়ে প্রথমে অন্ধকারেই ছিল পুলিশ।
পরে রহস্য ভেদে সাহায্য করে তরুণীর চার বছরের শিশু পুত্র। পুলিশকর্মীরা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। শিশুর সঙ্গে কথা বলতে গিয়েই পুলিশ জানতে পারে, গভীর রাতে শিশুটির বাবা অর্থাৎ তরুণীর স্বামী এসেছিলেন। সেখান থেকেই পুলিশের সন্দেহ, খুনের পিছনে হাত রয়েছে তরুণীর স্বামীর। তরুণীর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে স্বামীর হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ফিরোজ নামে ডাকছিল, হোম-আবাসিককে গণধর্ষণের ঘটনায় সেই সূত্র ধরে এগোচ্ছে পুলিশ