গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রাতে বাথরুমে যাওয়ার সময় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে স্বামীর। পড়শিদের কাছে এ কথাই জানিয়েছিলেন ক্ষীরপাইয়ের এক মহিলা। পড়শিরা এসে দেখেন, বাথরুমে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন মহিলার স্বামী তপন ঘোষ। তপনের স্ত্রী-র কথায় তড়িঘড়ি সৎকারের প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। তবে তপনের ছোট ভাই মহাদেব ঘোষের দাবি, দাদার গলায় দড়ির ফাঁসের দাগ দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার তপনকে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী রূপালি ঘোষ ও তাঁর ‘প্রেমিক’ শান্তনু পালকে গ্রেফতার করেছে ক্ষীরপাই ফাঁড়ি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাই পুরসভার বাসিন্দা তপন ঘোষের (৪৮) দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মহাদেবের দাবি, শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার আগে সন্দেহ হয় যে তাঁর দাদাকে খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘রবিবার বাড়িতে দাদা-বৌদি ও ছোট ভাইঝি ছিল। দাদার মৃত্যুর খবর শুনে কলকাতা থেকে এখানে এসেছিলাম। শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি তখন শেষ মুহূর্তে। সে সময় দাদার গলায় একটি ফাঁসের দাগ দেখতে পাই। ছোট ভাইঝিকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি যে, রাতে বৌদির কাছে একটি লোক এসেছিল। গলায় ফাঁস দিয়ে দাদাকে খুন করেছে সে। এর পর ভাইঝিকে মিথ্যে কথা বলতে বলেছিল বৌদি।’’
পেশায় কৃষক তপনের স্ত্রী রূপালির বিবাহবহির্ভূত একাধিক সম্পর্ক ছিল বলে পরিবারের অন্য সদস্যদের দাবি। তার জেরেই তপনকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। সোমবার মহাদেবের অভিযোগের ভিত্তিতে তপনের দেহ নিয়ে আসে পুলিশ। প্রথমে আটক করা হয় রূপালিকে। পরে তাঁকে ও তাঁর ‘প্রেমিক’ শান্তনু পালকে গ্রেফতার করে পুলিশ
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, এক নাবালক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার তপন-রূপালির। তবে একাধিক পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে রূপালির সঙ্গে তপনের প্রায়শই অশান্তি হত বলে দাবি। মহাদেবের কথায়, ‘‘অনেক দিন ধরে পরকীয়া চলছে বৌদির। এ নিয়ে বাধা দিতে গেলে লাভ হয়নি। দাদা নিরীহ মানুষ হওয়ায় বুঝিয়েসুজিয়ে বিষয়টি সামাল দিতে চেয়েছিল। দাদাকে খুনের জন্য বৌদির ফাঁসি চাই।’’