State New

রাতের ট্রেনে কামরায় উঠে মহিলার মুখে অ্যাসিড

জমির দখল নিয়ে বিবাদের জেরে চলন্ত ট্রেনে এক মহিলার মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠল। রবিবার রাতে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় বারুইপুরে ডাউন ডায়মন্ড হারবার লোকালের মহিলা কামরায় দুষ্কৃতীর ছোড়া অ্যাসিডে দুই মহিলা গুরুতর জখম হয়েছেন বলে রেল পুলিশ সূত্রে খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ২০:১৯
Share:

জমির দখল নিয়ে বিবাদের জেরে চলন্ত ট্রেনে এক মহিলার মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠল।

Advertisement

রবিবার রাতে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় বারুইপুরে ডাউন ডায়মন্ড হারবার লোকালের মহিলা কামরায় দুষ্কৃতীর ছোড়া অ্যাসিডে দুই মহিলা গুরুতর জখম হয়েছেন বলে রেল পুলিশ সূত্রে খবর। দুষ্কৃতী এখনও অধরা বলে রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্বরুপ হালদার নামে এক জমি ব্যবসায়ীকে সোমবার দুপুরে কল্যাণপুর স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা যাদবপুরে একটি বিউটি পার্লারে চাকরি করেন। রাতে তিনি নিয়মিত ওই ট্রেনেই বাড়ি ফিরতেন। বারুইপুরের পরের স্টেশন কল্যাণপুরে নামতেন। কল্যাণপুরের খ্রিস্টানপাড়ায় তাঁর বাড়ি। রবিবার রাতে মহিলা কামরায় জনা দশেক যাত্রী ছিলেন। তদন্তকারীদের কথায়, বারুইপুর থেকে ট্রেন ছাড়ার পর মুখে কাপড় বাঁধা অবস্থায় এক যুবক হাতে অ্যাসিডের একটি ছোট বোতল নিয়ে উঠেছিল। ট্রেন চলতে শুরু করার পরই ওই মহিলার মুখে অ্যাসিড ছুড়ে দেয়। চলন্ত ট্রেন থেকে নেমে পালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতী। কল্যাণপুরের বাসিন্দা ওই মহিলার মুখের বাঁ দিকে একপাশ ঝলসে যায়। বাঁ চোখেও অ্যাসিড পড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ওই মহিলার পাশে থাকা আর এক মহিলাও অ্যাসিডে জখম হন। রাতে দুই মহিলাকে বারুইপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাতেই এম আর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। এক মহিলা বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বলে অনুমান করছেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement

আরও পড়ুন

‘ওদের মদের নেশা, খুনের পরিকল্পনা, ঠান্ডা মাথা দাগি অপরাধীদের হার মানায়’

ওই মহিলার বাবা নিরঞ্জন মাকালের অভিযোগ, স্বরূপ হালদার নামে এক জমি ব্যবসায়ী মাস আটেক আগে তাঁর বাড়ির পিছনে প্রায় ছয় বিঘা জমি ছোট ছোট প্লট করে বিক্রি করছিলেন। তাঁর জমির উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন স্বরূপ। ওই রাস্তা তৈরি নিয়ে বেশ কয়েক বার স্বরূপের দলবল নিরঞ্জনবাবুর ছেলে তন্ময়কে মারধরও করে। ওই ঘটনায় একাধিক বার বারুইপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নিরঞ্জনবাবু। অভিযোগের ভিত্তিতে স্বরূপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু মাস তিনেক পর এলাকায় ফিরে এসে শাসানি দেওয়া শুরু করে স্বরূপ। মেয়ের মুখে অ্যাসিড ছুড়ে উচিত শাস্তি দেওয়া হবে বলেও শাসানি দেওয়া হয়। নিরঞ্জনবাবুর কথায়, তাঁর মেয়ে বছর আটেক বিবাহ বিচ্ছিন্না। আক্রোশের বশেই মেয়ের উপর অ্যাসিড হামলা করা হয়েছে।

তদন্তকারীদের কথায়, নিরঞ্জনবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে স্বরুপকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ওই ঘটনায় জড়িত মূল দুষ্কৃতী এখনও অধরা। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, স্বরূপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় কোনও দুষ্কৃতীকে দিয়ে অ্যাসিড ছড়ানো হয়েছে বলে অনুমান করছেন তদন্তকারীরা। তবে রাতে মহিলা কামরা কী করে অরক্ষিত অবস্থায় ছিল, সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলছেন নিত্যযাত্রীরা। রাতে মহিলা কামরায় জিআরপি অথবা আরপিএফের পাহারা থাকাটাই নিয়ম। সে ক্ষেত্রে ওই দিন কামরা অরক্ষিত ছিল কেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জিআরপি-র এক কর্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement