রোজ ভ্যালি কর্ণধারের সঙ্গী ও সাক্ষীর অপমৃত্যু

বেহালায় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন মন্টি। তবে বেহালার বাড়িতে নয়, আলিপুর থানা এলাকার চেতলা রোডে বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ ও শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩০
Share:

রোজভ্যালি কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। —ফাইল চিত্র

বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় অন্যতম প্রধান সাক্ষী ছিলেন তিনি। ওই সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের মন্টি জয়সওয়াল। গত ১২ ডিসেম্বর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে মন্টির। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যা করেছেন মন্টি।

Advertisement

বেহালায় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন মন্টি। তবে বেহালার বাড়িতে নয়, আলিপুর থানা এলাকার চেতলা রোডে বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ। স্ত্রী বর্ণালি জানান, রোজ ভ্যালি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বেশ কয়েক বছর চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়েছে তাঁর স্বামীকে। বর্ণালি বলেন, ‘‘মন্টি যে আগে রোজ ভ্যালিতে কাজ করত, সে-কথা শুনলেই আর কেউ ওকে চাকরি দিত না।’’ এক সময় মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে পড়েন মন্টি। তবে শেষের দিকে নতুন করে কাজকর্ম শুরুও করেছিলেন তিনি। ‘‘আমার তো ইদানীং দেখে মনে হচ্ছিল, ও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে,’’ বলেন বর্ণালি।

রোজ ভ্যালি যখন রমরম করে চলছিল, সেই সময় আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন মন্টি। আস্তে আস্তে তিনি হয়ে ওঠেন সংস্থার প্রধান গৌতমের ঘনিষ্ঠ সহচর। গৌতমের গ্রেফতারির পরে তাঁকে ডেকে জেরাও করেছে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তদন্তকারীদের বক্তব্য, মন্টি রোজ ভ্যালি কাণ্ডের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন। তদন্ত চলাকালীন সিবিআই ও ইডি-কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে সাহায্যও করেছিলেন তিনি। জেলবন্দি গৌতমের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন মন্টি। জেলের বাইরে কাউকে কোনও খবর বা নির্দেশ দেওয়ার থাকলে অনেক সময় মন্টির মাধ্যমেই তা পাঠিয়ে দিতেন গৌতম।

Advertisement

গৌতম কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীনও ছায়ার মতো তাঁর পাশে দেখা গিয়েছে মন্টিকে। এমনকি জেরা করার জন্য কলকাতা থেকে সিবিআই যখন গৌতমকে ভুবনেশ্বর নিয়ে যায়, তখন মন্টিও বেশ কয়েক দফায় ভুবনেশ্বরে গিয়ে থেকেছেন। ভুবনেশ্বরের জেলেও গৌতমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন তিনি। তবে বর্ণালি জানান, গত প্রায় এক বছর মন্টি নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে গৌতমের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ক্ষীণ হয়ে এসেছিল।

পুলিশ সূত্রে খবর, শেষ দিকে কয়েক জন কাবুলিওয়ালার কাছ থেকে টাকা ধার করেন মন্টি। সেই ঋণ তিনি শোধ করতে পারছিলেন না। সুইসাইড নোটে এ-সব কিছুর উল্লেখ নেই। তাতে মন্টি লিখেছেন, তিনি শুধু চান, স্ত্রী ও মেয়ে যেন ভাল থাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement