—প্রতীকী চিত্র।
রাত পোহালেই রাজ্য জুড়ে বৃদ্ধি হতে পারে মুরগির মাংসের দাম। কারণ প্রসঙ্গে জানা যাচ্ছে, পোলট্রি মুরগির ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের হুমকি। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানা এলাকায়। অভিযোগ, মুরগি বোঝাই গাড়ি আটকায় পুলিশ। গাড়ির সমস্ত বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও চালকের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন পুলিশকর্মীরা। টাকা না-থাকায় টর্চের পিছনের অংশ দিয়ে চালকের মাথায় আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। এর পর গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই জেলাভিত্তিক মুরগি ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। জেলায় জেলায় পুলিশি অত্যাচারের কারণে তাঁরা ব্যবসা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
এই অবস্থায় জেলা থেকে কলকাতা ও শহরতলিতে মুরগির মাংসের জোগান কম থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। মাংসের জোগান কম হলে বাজারগুলিতে চাহিদা অনুযায়ী দাম বাড়াতে পারে। এমনিতেই বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আমজনতার হেঁশেলে টান পড়েছে। সঙ্গে শাকসব্জির দামও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এমতাবস্থায় মুরগর মাংসের জোগান কমার সঙ্গে সঙ্গে মাংসের দাম বাড়লেও পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। তাই কলকাতার বাজারগুলিতে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করে দেওয়া টাস্ক ফোর্স।
টাস্ক ফোর্সের অন্যতম সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘আগামিকাল থেকেই পোলট্রি চিকেন সরবরাহকারীরা ধর্মঘটে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই আমরা সকাল থেকেই কলকতার সব বাজারে নজর রাখব। মাংসের সরবরাহ বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ রয়েছে কি না, বা মাংসের দাম বেড়েছে কি না, সেদিকেও আমাদের নজর থাকবে।’’
তবে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিতে পোলট্রি মুরগি সরবরাহকারী সংস্থার মালিকদের তাঁদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পোলট্রি ফেডারেশনের কর্মকর্তা মদনমোহন মাইতি বলেন, ‘‘এই ধর্মঘট সমর্থন করছি না। যে ঘটনা ঘটেছে তার পর আমাদের কাছে অভিযোগ আসে। সেটা আমরা রাজ্যের প্রশাসনকে জানাই। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। তেমন হলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখানো যেতে পারে কিন্তু ধর্মঘট কোনও পথ নয়। আমরা তাঁদের ধর্মঘট থেকে সরে আসার আবেদন জানাব।’’ অন্যদিকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পোলট্রি মুরগী সরবারকারীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবারই বৈঠকে বসছে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর। সেখানেই এই জট খুলতে পারে বলে আশাবাদী রাজ্য সরকার।