গ্রেট নট এবং ব্ল্যাক নেক্ড গ্রিব। ছবি: সুগত সাহা।
পশ্চিমবঙ্গ বন দফতর আয়োজিত ‘জলের পাখি সুমারি’ পর্ব শেষ হল সোমবার। এ সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্টটি মঙ্গলবার প্রকাশিত হবে বলে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বিনোদকুমার যাদব জানিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ বন দফতরের উদ্যোগে এই প্রথম রাজ্য জুড়ে সর্বাত্মক ভাবে জলের পাখি সুমারি হল।
সোমবার বিনোদ বলেন, ‘‘ রাজ্য বন দফতর ১২ জানুয়ারি থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জলাভূমি, নদীর তীর এবং বঙ্গোপসাগর উপকূলে পাখি সুমারির কাজ শুরু করেছিল। বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও)-দের তত্ত্বাবধানে সংগঠিত এই কাজে বিভিন্ন পাখিপ্রেমী সংস্থা এবং পক্ষী পর্যবেক্ষকদের সাহায্য নিয়েছি আমরা। প্রতি বছর ২ ফেব্রুয়ারির দিনটি ‘আন্তর্জাতিক জলাভূমি দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। তাই প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশের জন্য এই দিনটিকে আমরা বেছে নিয়েছি।’’
বিনোদ জানান, এ বারের সুমারি পর্বে কলকাতার পাখি পর্যবেক্ষদের সংগঠন প্রকৃতি সংসদের সদস্যেরা সুন্দরবন ব্যাঘ্রপ্রকল্পের কোর এলাকায় ‘ব্ল্যাক নেক্ড গ্রিব’-এর সন্ধান পেয়েছেন। এটি একটি উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ। পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগের অন্তর্গত জম্বুদ্বীপে প্রায় ৩ হাজার গ্রেট নট প্রজাতির পাখির সন্ধান মেলাও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে জানান তিনি।
স্তেপ গাল এবং জম্বুদ্বীপে পাখির ঝাঁক।
প্রকৃতি সংসদের তরফে পাখি সুমারিতে অংশগ্রহণকারী দলের নেতা অপূর্ব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় (রেড ডেটা লিস্ট) গ্রেট নট ‘বিপন্ন প্রজাতি’ হিসেবে চিহ্নিত। এর আগে ভারতে কখনও এই পরিযায়ী প্রজাতিটির এমন বিপুল সংখ্যায় উপস্থিতি দেখা যায়নি।’’ তিনি জানান, সুমারির গোড়াতেই জম্বুদ্বীপে প্রায় ৩ হাজার গ্রেট নটের সন্ধান পান তাঁরা। পাশাপাশি, সেখানে রাশিয়া থেকে উড়ে আসা স্তেপ গালও ক্যামেরাবন্দি হয়। অপূর্ব জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএফও মিলন মণ্ডল-সহ বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকদের সহায়তায় ওই বনাঞ্চলের উপকূল এবং নদীর চরগুলিতে নিবিড় ভাবে পাখি সমীক্ষার কাজ হয়েছে।
বার্ড ওয়াচার্স সোসাইটি-র সদস্য, পাখি বিশারদ শান্তনু মান্না সোমবার বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ির গজলডোবায় নিয়মিত ব্ল্যাক নেকড গ্রিব দেখা যায়। মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ জেলাতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে এদের উপস্থিতি নথিভুক্ত হয়েছে। কিন্তু এর আগে নিম্নবঙ্গে কখনও এই পরিযায়ী প্রজাতিটি ক্যামেরাবন্দি হয়নি।’’