ছবি: শাটারস্টক
মাঘের বাঘা শীত তো দূর, উল্টে কার্যত বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছে শীতের! আলিপুর হাওয়া অফিসের খবর, আগামী ক’দিন রাতের পারদ সামান্য নামতে পারে। জাঁকিয়ে শীতের আশা প্রায় নেই। আম-জনতার অভিজ্ঞতা, পৌষ সংক্রান্তি পেরোতে না-পেরোতেই বাতাসে যেন বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে!
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, ‘‘বর্ষার মতো শীত বিদায়ের নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট হয় না। তবে জাঁকিয়ে শীত পড়ার মতো পরিস্থিতি আর হবে না বলেই মনে হচ্ছে।’’
শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি বেশি। তবে কলকাতার উপকণ্ঠে ব্যারাকপুরের ১২.৯ ডিগ্রি। গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলাগুলিতে কলকাতার তুলনায় ঠান্ডা কিছুটা বেশি রয়েছে। হাওয়া অফিসের খবর, এ দিন শ্রীনিকেতন ১৩ ডিগ্রি, পুরুলিয়া ১৪ ডিগ্রি, বাঁকুড়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি ছিল। উত্তরবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সের জেলাগুলিতেও আহামরি ঠান্ডা নেই। গণেশবাবু বলছেন, ‘‘আগামী সোম ও মঙ্গলবার কলকাতার তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে তা ১৪ ডিগ্রির কাছেপিঠে থাকতে পারে।’’
বাঙালির ক্যালেন্ডারে শীত মানেই পৌষ ও মাঘ মাস। গত কয়েক বছর ধরেই চরিত্র বদলাচ্ছে শীত। কার্যত পৌষের ক’দিন ছাড়া সে ভাবে জাঁকিয়ে শীত পড়ে না বললেই চলে। তা হলে কি শীতের চরিত্রে বদল আসছে?
মৌসম ভবনের আবহবিদেরা বলছেন, এ বছর যে শীতের মেজাজ দুর্বল থাকবে তা আগেভাগেই বলা হয়েছিল। যদিও শীতের মেজাজ যে একেবারে দুর্বল তা বলা চলে না। বরং আবহবিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদদের একাংশ বলছেন, শীতের চরিত্রে খামখেয়ালিপনা দেখা যাচ্ছে। আচমকা দু’দিনের শীতে রেকর্ড ঠান্ডা পড়ছে। তার পরেই এক লাফে তরতরিয়ে পারদ চড়ছে। এ বার দিল্লিতে ১১৮ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে।
গত বছরের শেষে কলকাতাতেও হাড় কাঁপানো শীত পড়েছিল। আবহবিজ্ঞানীদের অনেকে বলছেন, শীত নিয়ন্ত্রণ করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী হাওয়া)। সেই ঝঞ্ঝার চরিত্রেও খামখেয়ালিপনা দেখা যাচ্ছে। তার পিছনে জলবায়ু বদলের কারণ দায়ী কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।