লাঠি, ঝাঁটা হাতে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মহিলাদের। —নিজস্ব চিত্র।
ওর সঙ্গে শুক্রবার সকালেই দেখা হল। আর শনিবার ও নেই। মেনে নিতে পারছি না। ওইটুকু মেয়ে কার কী ক্ষতি করেছিল, জানি না।
বোনের দেহ যখন এল, সেই দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসক তরুণীকে যে ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, আমার বোনের উপরে তার থেকে কম কিছু হয়নি। এই ঘটনার বিচার পাব তো?
কাকা-কাকিমার বড় মেয়ে ও। বড় আদরের। ভাল ভাবে পড়াবে বলে মেয়েকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করেছিল কাকা। পড়াশোনায় ভালই ছিল। টিউশন থেকে ফিরতে সন্ধ্যা হলে কাকা নিয়ে আসত। শুক্রবার দিনের আলো থাকায় মনে হয় কাকা বলেছিল, একা চলে আসতে। সেটাই কাল হল।
কাকার সঙ্গে ফিরবে ভেবে কাকিমা প্রথমে সে ভাবে মাথা ঘামায়নি। ৮টা নাগাদ কাকা ফিরতেই খোঁজ শুরু হয়। বোন একা ফিরলে দাদু গিয়ে বড় রাস্তার মোড় থেকেনিয়ে আসত। কাল দাদু অপেক্ষা করে চলে আসে।
বোন না ফেরায় বাড়ির লোকজন প্রথমেই ফাঁড়িতে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোনও গুরুত্বই দেয়নি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ যখন কাজ শুরু করল, আর কিছুই করার ছিল না। একটা বাচ্চা মেয়ের নিখোঁজের খবর পুলিশ কি আর একটু গুরুত্ব দিয়ে দেখতে পারত না? এ সব ক্ষেত্রে পুলিশই যদি পাশে না দাঁড়ায়, আমরা সাধারণ মানুষ কার উপরে ভরসা করব? শুনলাম নাকি নেতারাও এসেছিল! ঘটনার পরে এসে আর কী লাভ! সবাই আগে থেকে একটু চেষ্টা করলে বোনটা বেঁচে যেত।
সামনে পুজো। পুজো মানেই কত আনন্দ। গত বারও ওকে নতুন জামা পরে কত মজা করতে দেখেছি।এ বারও নিশ্চয়ই জামাকাপড় কেনা হয়ে গিয়েছিল। কোথায় যাবে, কী করবে ভেবে রেখেছিল। কিছুই আর করা হল না।
আমাদের কারও আর পুজোয় মজা করার মতো মনের অবস্থা নেই। বিশেষত মেয়েরা তো ভয় পেয়ে গিয়েছে। ওইটুকু বাচ্চা মেয়ের এই অবস্থা হলে, অনেকের সঙ্গেই হতে পারে। পুজোতেও রাতে বেরোতে আর কি সাহস পাবে কেউ?
মৃতার জেঠতুতো দিদি