Pakistan-Bangladesh Ties

সম্পর্ক আরও ‘গভীর’ করতে চাই! পহেলগাঁও কাণ্ডে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার আবহে বাংলাদেশকে বার্তা দিলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী

ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সংঘাত আরও প্রকট হয়েছে পাকিস্তানের। দু’দেশই একে অন্যকে কূটনৈতিক ভাবে ‘আঘাত’ এবং ‘প্রত্যাঘাত’ করেছে। বৃদ্ধি পেয়েছে উত্তেজনা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও মসৃণ করতে চায় পাকিস্তান।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ২১:২৯
Share:
বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের পতাকা।

বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের পতাকা। — প্রতীকী চিত্র।

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও ‘মজবুত’ করতে চাইছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে সেই বার্তাই দিয়েছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা মুহাম্মদ আসিফ। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ককে ‘গভীর’ করার জন্য তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সম্পর্ককে আরও উন্নত করতে ঢাকা এবং ইসলামাবাদ আন্তরিক ভাবে উদ্যোগী হয়েছে বলেও জানান তিনি। ঘটনাচক্রে, ভারত এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি এবং উদ্ভূত উত্তেজনার পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও ‘দৃঢ়’ করার বার্তা দিলেন আসিফ।

Advertisement

গত শুক্রবার ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘জিয়ো নিউজ়’ জানিয়েছে, ওই অনুষ্ঠানেই বাংলাদেশের উদ্দেশে বন্ধুত্বকে আরও ‘গভীর’ করার বার্তা দেন তিনি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং সে দেশের সাধারণ মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে ইসলামাবাদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। বস্তুত, কয়েক দিন আগেই ঢাকায় বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। প্রায় দেড় দশক পরে বিদেশসচিব স্তরে এমন কোনও বৈঠক হয়েছে দুই দেশের। দু’দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইসাক দারের। তবে পহেলগাঁওকাণ্ডের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেই সফর পিছিয়ে দিয়েছেন পাক উপপ্রধানমন্ত্রী। এরই মধ্যে ইসলামাবাদে বাংলাদেশি দূতাবাসের অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

বস্তুত, পহেলগাঁওকাণ্ডের পর বিভিন্ন দেশ ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করতে প্রায় ২৪ ঘণ্টা সময় লেগে গিয়েছিল। গত মঙ্গলবার জঙ্গিদের হত্যালীলার কথা প্রকাশ্যে আসার পর পরই আমেরিকা থেকে শুরু করে ব্রিটেন, রাশিয়া, চিনের মতো দেশগুলি হামলার নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছিল। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যেও অনেকে মুখ খুলেছিল মঙ্গলবারেই। পহেলগাঁও হামলার বিরোধিতা করে শ্রীলঙ্কা, ভূটান, নেপাল। কিন্তু বাংলাদেশের তরফে কোনও বিবৃতি আসেনি মঙ্গলবার। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি আসতে আসতে বুধবার দুপুর গড়িয়ে যায়।

Advertisement

গত মঙ্গলবার ওই হামলায় স্থানীয় কয়েকজন জঙ্গি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও বাকি জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকে এ দেশে এসেছিল বলে জানা যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের ওই বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা থাকলেও পাকিস্তান প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেনি। পাকিস্তানও দাবি করেছে, পহেলগাঁওয়ের সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। কাশ্মীরে ওই জঙ্গিহানার পর থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সিন্ধু চুক্তি স্থগিত, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে নয়াদিল্লি। পাল্টা ইসলামাবাদও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতকে তারা আর নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবে না। শিমলা চুক্তি নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামাবাদ। এর মধ্যে উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনেরও অভিযোগ উঠেছে পাক সেনার বিরুদ্ধে। ভারতের সঙ্গে এই উত্তেজনার মাঝে বাংলাদেশকে আরও কাছে টানতে উদ্যোগী হয়েছে পাকিস্তানের সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement