স্কুলে স্কুলে স্যানিটাইজ়েশন বা জীবাণুনাশের কাজ শেষ করতে হবে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে। ফাইল চিত্র।
এক দিকে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষা শিবিরের জোরদার দাবি এবং শিক্ষা প্রশাসনের তোড়জোড়, অন্য দিকে করোনার নতুন দাপট। এই টানাপড়েনের মধ্যে নভেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহেই কি ফের খুলতে চলেছে স্কুল? নিছক প্রশ্ন নয়, শনিবার স্কুলশিক্ষা দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের একটি ভিডিয়ো-বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতে এই নিয়ে চলছে আশা-আশঙ্কার দোলাচল।
প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের সঙ্গে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের শনিবারের ভিডিয়ো-সম্মেলনে বলা হয়েছে, স্কুলে স্কুলে স্যানিটাইজ়েশন বা জীবাণুনাশের কাজ শেষ করতে হবে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে। সেই সঙ্গে স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ডেকে স্কুলের জীবাণুমুক্তির তথ্যও জানাতে হবে। নবম থেকে দ্বাদশের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যাদের আধার কার্ড এখনও বাংলা শিক্ষা পোর্টালে আপলোড হয়নি, তাদের ওই পোর্টালে দ্রুত আধার নম্বর আপলোড করতে বলতে হচ্ছে স্কুল-প্রধানদের।
এই নির্দেশের মধ্যে আশার ইঙ্গিত পাচ্ছেন শিক্ষক শিবিরের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, সরাসরি স্কুল খোলার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি ঠিকই। তবে দ্রুত স্কুল খোলার জন্যই শিক্ষা দফতরের বৈঠকে এই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে মূলত ১৪টি বিষয়ে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ জানান, স্কুল খোলার আগে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির যে-সব পড়ুয়ার আধার কার্ড নেই, তাদের আধার কার্ড তৈরির কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল মাসখানেক আগে। কারণ, করোনার টিকা নিতে হলে আধার কার্ড দরকার। তখন শিক্ষা দফতর থেকে জানানো হয়েছিল, কেন্দ্র থেকে অনুমতি মিললে স্কুল খোলার আগে নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের করোনার টিকাকরণ দ্রুত সরে ফেলা হবে। শিক্ষক মহলের একাংশের আশা, স্কুল শীঘ্রই খুলতে চলেছে বলেই নবম-দ্বাদশের পড়ুয়াদের আধার কার্ড দ্রুত পোর্টালে আপলোড করার কথা পুনরায় বলা হয়েছে। শিক্ষা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে আরও বলা হয়েছে, বেসরকারি স্কুলের যে-সব পড়ুয়ার মা বা বাবা করোনায় মারা গিয়েছেন, তাদের চিহ্নিত করে স্কুল-প্রধানেরা যেন দ্রুত শিক্ষা দফতরকে তা জানিয়ে দেন। যে-সব ছাত্রছাত্রীর মা বা বাবা অথবা দু’জনেই করোনায় মারা গিয়েছেন, চলতি শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি স্কুলগুলি তাদের ফি মকুব করছে কি না, তা জানতে চাওয়া হবে।
উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে শিক্ষক বদলির বিষয়টি কী অবস্থায় আছে এবং কী কারণে বদলি আটকে আছে, তা দেখে দ্রুত সেই সব বদলি বাস্তবায়িত করার কথাও ওই বৈঠকে বলা হয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর। স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর কত পদ খালি আছে, তার সর্বশেষ তথ্য দাখিল করতে বলা হয়েছে প্রধান শিক্ষকদের।
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “আমরা চাই, স্কুল দ্রুত খোলা হোক। তবে এখন বহু প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা ছুটিতে আছেন। স্কুল স্যানিটাইজ়েশন-সহ বিভিন্ন কাজের যে-নির্দেশ এসেছে, এই ক’দিনের মধ্যে তা পালন করা খুবই কঠিন।”