জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে পালাবদলের পরে, দশ বছর খাদ্য দফতরের দায় সামলেছেন তিনি। আড়াই বছর আগে, তৃণমূল তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে বদলে গিয়েছিল তাঁর দফতর। কিন্তু বন দফতরের সেই দায়িত্ব যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের খুব পছন্দের ছিল না, ঘনিষ্ঠমহল সূত্রেই তা জানা গিয়েছে।
তিনি ইডি হেফাজতে যাওয়ার পরে অরণ্যভবনে কান পাতলেও তাই শোনা যাচ্ছে, নব্য দফতরে কতিপয় শীর্ষকর্তা ছাড়া গত আড়াই বছরে অন্য বনাধিকারিকদের সঙ্গে তেমন হৃদ্যতা গড়ে ওঠেনি জ্যোতিপ্রিয়ের। এই পরিস্থিতে তাঁকেই বন দফতরের দায়িত্বে রেখে দেওয়া হবে, না কি তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হবে কোনও অন্য মুখ, জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়েই।
জ্যোতিপ্রিয়ের দল, তৃণমূলের অন্দরের খবর এ ব্যাপারে শেষ কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ৮ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ ব্যাপারে তিনি দলের শীর্ষ নেতাদের প্রাথমিক মতামতও নিতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। তবে, গ্রেফতার হওয়ার পরে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও তাঁর পুরনো দফতরে কিছু দিন রেখে দেওয়া হয়েছিল। দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারের পরেও সে নীতির ব্যতিক্রম হয়নি। বরং দল যে অনুব্রতের পাশে রয়েছে তা বোঝাতে সুদীর্ঘকাল ওই পদেই বহাল রাখা হয়েছিল তাঁকে। এখন জ্যোতিপ্রিয়ের ক্ষেত্রেও দল সেই পন্থা বজায় রাখে কি না তার দিকেই নজর রাখতে চায় সংশ্লিষ্ট মহল।
অবশ্য, বন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বীরবাহা হাঁসদার কাজেও তিনি যে অখুশি নন, নানা সময়ে তার আভাস মিলেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। বীরবাহার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং অমায়িক ব্যবহারে শুধু দলীয় নেতৃত্ব নয়, বনকর্তাদের অধিকাংশই যে সন্তুষ্ট তা-ও জানেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক কজেও তাঁর দক্ষতা রয়েছে বলে মনে করেন বনকর্তাদের অনেকেই। সেই সঙ্গে তিনি জনজাতি শ্রেণির প্রতিনিধিও। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন,
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে জনজাতিদের বার্তা দেওয়ারও একটা সুযোগ থাকছে দলের।
তবে, দলীয় সূত্রে খবর, নতুন মুখ হিসাবে আলিপুরদুয়ার কিংবা কোচবিহার থেকেও কাউকে ওই পদে নিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ প্রশ্নের উত্তর মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরেই আঁচ করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিভাগীয় কর্তারা।