Gunman in Malda School

বিজেপির হয়ে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দেন স্ত্রী, মালদহের বন্দুকবাজ তখন থেকেই ‘বিচ্ছিন্ন’

২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন দেব বল্লভের স্ত্রী রীতা। ভোটে জিতেওছিলেন। মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হন তিনি। পরে অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:০৫
Share:

বন্দুক নিয়ে স্কুলে হানা দেওয়া দেবের কোনও রাজনৈতিক যোগ আছে কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি। —নিজস্ব চিত্র।

বন্দুক, পেট্রল বোমা নিয়ে সটান ঢুকে গিয়েছিলেন স্কুলে। শিক্ষিকার অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীদের দিকে বন্দুক তাক করে হুমকি দিয়েছিলেন মালদহের দেব বল্লভ। বলেছিলেন, তাঁর স্ত্রী নিখোঁজ। কেউ তাঁকে সাহায্য করছে না। তাই এই পথ নিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় সূত্র বলছে, দেবের স্ত্রী তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনে চলে গিয়েছেন। ছেলেকে নিয়ে আলাদা থাকেন তিনি। দেবের অবশ্য দাবি, স্ত্রীকে খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি।

Advertisement

মালদহের মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাই স্কুলে বন্দুক হাতে ঢুকে পড়ায় দেব বল্লভকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদহের মুচিয়া নেমুয়া এলাকার বাসিন্দা দেব। যুবকের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। দম্পতির এক সন্তান। তবে সে রয়েছে মায়ের অর্থাৎ, দেবের স্ত্রীর হেফাজতে।

দেবের স্ত্রীর নাম রীতা বল্লভ রায়। তাঁর একটি রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন রীতা। ভোটেও জিতেছিলেন। মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যও হন। তবে ২০২০ সালে বিজেপি ছেড়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ করেন। দেব মানসিক ভারসাম্যহীন, এই অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন রীতা। তার পর থেকে স্বামী-স্ত্রী আলাদাই থাকেন।

Advertisement

দেবের কোনও রাজনৈতিক যোগ আছে কি না, জানা যায়নি। তবে মঙ্গলবার মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাই স্কুলে ঢুকে বন্দুক উঁচিয়ে কাটা কাটা ভাবে দেব যে কথা বলেছেন, তা যোগ করলে দাঁড়ায়, তাঁর স্ত্রীকে কেউ বা কারা ভুল বুঝিয়ে তাঁর থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। এটাই তাঁর অভিযোগ। ভিডিয়োয় এক বার এক তৃণমূল নেত্রীর নামও বলতে শোনা যায় দেবকে। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীকে বলেছে, তোমার স্বামীর মতো এমন বাজে চরিত্রের লোক হয় না। সেই রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমাকে বলেছে, তোমার স্ত্রীর চরিত্র খারাপ। টিএমসির নেতা, আমাদের ওই মৃণালিনীও একই কথা বলেছে।’’

স্কুলে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়া বিষয়টিকে মোটেই সহজ ভাবে দেখছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে ভাবে দেবকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ আটক করেছে তাতে পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানান, পড়ুয়াদের পণবন্দি করার চেষ্টা হচ্ছিল। এই ঘটনার পিছনে চক্রান্তের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। এই প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি আবার ভিন্ন। তিনি জানান, দেব বল্লভের স্ত্রী এক সময় বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। তার পর তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তখন থেকে সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করেন। অন্য দিকে, দেবকে পাগল প্রমাণের চেষ্টা হয়। আইনের দ্বারস্থ হয়েও কিছুই করে উঠতে পারেননি দেব। সুকান্তের কটাক্ষ, এর কারণ পুলিশ তৃণমূলের হয়ে কাজ করে।

এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কুণাল জানান, এই বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই। তাই না জেনে কোনও মন্তব্য করবেন না। মালদহের তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। আর আমি নিজেও জেলার বাইরে আছি। এই বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement