বিদ্যুৎ গ্রিডের জমি নিয়ে ভাঙড়ের সাম্প্রতিক গোলমালে চোখের সামনে কিছু লোককে গুলি চালাতে দেখেও পুলিশ কেন তাদের ধরতে পারেনি, সেই প্রশ্নের জবাব পায়নি কলকাতা হাইকোর্ট। এ বার রাজ্য সরকারের কাছে তাদের প্রশ্ন, ভাঙড়ের অন্দোলনে ধৃতদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ-তে মামলা দায়ের করা কতখানি যুক্তিযুক্ত? হলফনামায় এর জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কোর্ট।
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী বুধবার এই নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের কাছে এটাও জানতে চেয়েছেন, ওই আইনে ধৃতদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের সময়সীমা বাড়ানোর অনুমতি নিম্ন আদালত কবে দিয়েছে।
ওই আন্দোলনের জেরে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা করেছে রাজ্য। শর্মিষ্ঠা চৌধুরী, কুশল দেবনাথ, শঙ্কর দাস-সহ কয়েক জন হাইকোর্টে পাল্টা আবেদনে বলেছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হচ্ছে জেনেও ইউএপিএ-তে মামলা করেছে রাজ্য। তা খারিজ করা হোক। পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল না। আন্দোলনকারীরা বাইরে থেকে কাশীপুরে ঢুকে সেখানে ‘মুক্তাঞ্চল’ গড়তে চেয়ে বাসিন্দাদের উস্কেছেন। আন্দোলনের নামে বোমা ছোড়া হয়েছে। রাস্তা কাটা হয়েছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের গাড়ি। বিচারপতি তখন মন্তব্য করেন, ‘‘সংবিধান নাগরিকদের দেশের সর্বত্র অবাধে ঘোরাফেরা করার অধিকার দিয়েছে। এলাকার বাইরের লোক আন্দোলনে সামিল হতে পারবেন না কেন?’’ তিনি অবশ্য একই সঙ্গে জানান, আন্দোলন মানেই সেটাকে হিংসাত্মক হতে হবে, এটাও ঠিক নয়।
আবেদনকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, পুলিশ বেছে বেছে কয়েক জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা করছে। এটা বেআইনি। পরবর্তী শুনানি ৭ জুন।