উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থানাধিকারী রুমানা সুলতানা। ফাইল চিত্র।
‘হিন্দু না ওরা মুসলিম, ওই জিজ্ঞাসে কোন জন’, কাজী নজরুলের বহুচর্চিত গানের লাইনই ফের ঘুরে-শোনা যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের আবহে। প্রশ্ন উঠছে, পরীক্ষায় যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে, তার নাম উচ্চারণেরও আগে কেন বড় হয়ে উঠবে তার ‘মুসলিম’ পরিচয়টি? ফল ঘোষণার সময়ে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত মেয়েটির নাম বলারও আগে তার ধর্মপরিচয় উল্লেখ করেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস। তাতে আহত রাজ্যের নাগরিকদের একাংশ।
শুক্রবার সকালে এ নিয়ে টুইট করেন বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান তথা পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি-র সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় তোষণের রাজনীতি নতুন মাত্রা পেল যখন উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের সময় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত মেয়েটির নাম বলার আগে তার ধর্মপরিচয় উল্লেখ করলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী। উচ্চ মাধ্যমিকের একটি মেয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার থেকেও বড় হয়ে দাঁড়াল তাঁর ধর্ম পরিচয়। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী বারবার সেটি উল্লেখ করলেন। এই ছাত্রত্রীদের আর কত দিন এ সব সহ্য করতে হবে?
মুর্শিদাবাদের কান্দির মেয়ে রুমানা সুলতানার সাফল্য কোনও ‘অঘটন’ নয় বলে সরব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘মুসলিম মহিলা প্রথম হয়েছে’, যারা বার বার বলছে, তাদের এত অবাক কেন হতে হচ্ছে! ছাত্রীর নাম দেখে সে কোন ধর্মের বোঝানোর দায়িত্ব না-নিলে খুশি হব।’ অনেকেই লিখেছেন, মুসলিম পড়ুয়ারা এর আগেও রাজ্যে মেধা তালিকায় প্রথম সারিতে এসেছেন। তখন কিন্তু ধর্মের উল্লেখ দেখা যায়নি। এর ফলে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক বিভাজন বাংলাকে বিপজ্জনক জায়গায় নিয়ে যাবে, মত তাঁদের। তবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে বলা হয়েছে, জেলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি মেয়ে কতটা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে, তা বোঝাতেই ‘মুসলিম’ শব্দটি বলা হয়েছে। নানা ক্ষেত্রেই তো কিছু বোঝাতে সংখ্যালঘু শব্দটি ব্যবহার হয়। এখানেও সে-ভাবেই বলা হয়েছে।