ফাইল চিত্র।
কয়লা চুরি রুখতে ইসিএলের তৈরি টাস্ক ফোর্সের মাথায় ছিলেন তিনি। তদন্ত শেষে জমা দিয়েছিলেন বড় রিপোর্ট। দায়ের করেছিলেন বেশ কিছু অভিযোগও। কী ছিল সে রিপোর্টে, অভিযোগ ছিল কাদের বিরুদ্ধে, সে সব জানতে তাঁকে তলব করা প্রয়োজন বলে দাবি আইনজীবীদের। ১৮ জুলাই ও ১ অগস্ট আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে কয়লা-মামলার শুনানিতে অভিযুক্তদের আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর রাজা পাল কেন সিবিআইয়ের ধরাছোঁয়ার বাইরে? সিবিআই আধিকারিকেরা অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
এই মামলায় সিবিআইয়ের প্রাথমিক চার্জশিটে ৪১ জনের নাম রয়েছে। তার মধ্যে ইসিএলের আট জন প্রাক্তন ও বর্তমান কর্মী-আধিকারিক আছেন। গত দু’টি শুনানিতে তাঁদের আইনজীবীরা আদালতে জানান, কয়লা চুরি আটকাতে ইসিএলের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের প্রধান ছিলেন সংস্থার তৎকালীন ‘চিফ অব সিকিউরিটি’ রাজা। তাঁদের দাবি, রাজার ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। অভিযুক্ত পক্ষের অন্যতম আইনজীবী আশিস কুমার সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছেও দাবি করেন, “রাজা পালকে এই মামলায় যুক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। রাজা পাল ও টাস্ক ফোর্সের বিষয়ে কিছু তথ্য জানতে চেয়ে আদালতে আর্জি জানিয়েছি।” অভিযুক্তদের আর এক আইনজীবী আশিস মুখোপাধ্যায়ও দাবি করেছেন, কয়লা লুটের বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মী-আধিকারিকেরা বিশদ রিপোর্ট তৈরি করে রাজাকে দিয়েছিলেন।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে সংস্থার অধীনস্থ বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়লা লুটের খবর আসায়, ২০১৯ সালে ২২ সদস্যের একটি টাস্ক ফোর্স গড়া হয়। সে বছর ৪ সেপ্টেম্বর তারা কাজ শুরু করে। সেটির প্রধান ছিলেন রাজা। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে কোল ইন্ডিয়ার অধীনস্থ মহানদী কোলফিল্ডস লিমিটেড (এমসিএল)-এ বদলি হয়েছেন তিনি। এখন তিনি ওড়িশায় কর্মরত বলে সংস্থা সূত্রের খবর। ফোনে যোগাযোগ করা হলে রাজার দাবি, “প্রায় ৩০০ পাতার একটি রিপোর্ট আমি সংশ্লিষ্ট জায়গায় জমা দিয়েছিলাম। ওই ফোর্সের প্রধান থাকাকালীন কয়লা চুরি রুখতে অন্তত ৫০টি মামলা করেছিলাম। অনুপ মাজি, বিনয় মিশ্র এবং কয়েক জন পুলিশকর্তার বিরুদ্ধেওমামলা করেছিলাম।” তবে সেগুলি কোথায় করেছিলেন, কোন পুলিশকর্তাদের বিরুদ্ধে, সে সব ভাঙতে চাননি রাজা। অভিযুক্তদের আইনজীবীদের দাবি প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “মৌচাকে ঢিল পড়ায় ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে।”
রাজাকে না ডাকা নিয়ে তদন্তকারীরা কিছু বলতে চাননি। অভিযুক্তদের আইনজীবীদের দাবির প্রেক্ষিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার আদালতে শুধু জানান, তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। আইনজীবী সূত্রের দাবি, রাজার রিপোর্ট তদন্তে সহায়ক হয়েছে। রাজা বলছেন, “আদালত ডাকলে উপযুক্ত তথ্য-সহ হাজির হব। যে কোনও জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে আমি প্রস্তুত।”