দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে লণ্ডভণ্ড চারিদিক। —ফাইল চিত্র।
পাঁচ দিন পার। দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের সংখ্যা মোটে এক। ফলে, প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই।
বিস্ফোরণের পর থেকেই গ্রামবাসীদের মুখে শোনা যাচ্ছিল তৃণমূল নেতা আজিবর রহমানের নাম। তিনি এ বার পঞ্চায়েত ভোটে এলাকায় দলের প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন। অনেকেরই দাবি, বেআইনি বাজি কারখানা চালানোর মূল মাথা আজিবরই। তাঁকে গ্রেফতারের দাবিও ওঠে। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর ছেলে ও ভাইপোকে জনরোষ থেকে বাঁচানোর পরেও আজিবর কিন্তু অধরাই রয়ে গিয়েছেন। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, ঘটনার পর আজিবরের বড় ছেলে এবং ভাইপোকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তার পরও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। আজিবরকে ধরার চেষ্টাও করছে কি না সন্দেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, আজিবরের খোঁজ চলছে। পুলিশের আরও যুক্তি, আজিবর অভিযুক্ত হলেও তাঁর ছেলে বা ভাইপো নন। বারাসতের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাজি বিস্ফোরণের পর মোট ১১টি আলাদা মামলা রুজু করা হয়েছে। আজিবর-সহ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তাদের গ্রেফতার করতে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।” বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের এখনও দাবি, “ওই গ্রামে পঞ্চায়েত ভোটে আইএসএফ জেতার পর থেকেই বেআইনি কারবারের রমরমা শুরু হয়। তৃণমূলের কেউ যুক্ত নয়।” স্থানীয় বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষও ঘটনার পরে স্থানীয় আইএসএফ নেতা রমজান আলির নাম সামনে আনেন। পরে বারাসতের পুলিশ সুপারও জানান, রমজানের খোঁজ চলছে।
রমজানের পরিবারের দাবি, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। আইএসএফের রাজ্য সহ-সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রমজানের বাড়িতে ভোটের সময় আমাদের দলীয় কার্যালয় হয়েছিল। ঘটনার পরে আমি এবং নওসাদ সিদ্দিকী যখন যাই, তখনও রমজান আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তৃণমূলের মন্ত্রী রমজানেরনাম নিতেই পুলিশ খু্ঁজতে শুরু করেছে।”
বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “পুলিশ, তৃণমূল, দুষ্কৃতী একত্রে রাজ্য জুড়ে বোমার কারখানা বানাচ্ছে। এটা কিন্তু সাধারণ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা নয়। জঙ্গি যোগ থাকতে পারে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীর অভিযোগ, “পুলিশের মদত ছাড়া এই বেআইনি কাজ চলতে পারে না। বেআইনি বাজি কারবারের মাথাদের রক্ষা করাই পুলিশের মূল উদ্দেশ্য।’’