রাজনীতিতে সক্রিয় হোন বা নিষ্ক্রিয়, শোভন আছেন মমতার ‘কানন’-এই, কেন এখনই নীরবতা ভাঙলেন?

নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী শোভন। কেন এত দিন পর সরব তিনি?

Advertisement

অমিত রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ১১:১৩
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে পারেন কিংবা নিষ্ক্রিয়, শোভন আছেন মমতার ‘কানন’ হয়েই। সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই বার বার বোঝাতে চাইলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অবমাননা হলে প্রকাশ্যে এসে সরব হবেন তিনি। নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী শোভন। ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে শোভন জানান, নন্দীগ্রামের ঘটনাটি যে দিন ঘটে, সে দিন তিনি ছিলেন তৃণমূলনেত্রীর সঙ্গে। শান্তিকুঞ্জ অর্থাৎ শুভেন্দুর কাঁথির বাড়ি থেকে নন্দীগ্রামে যাওয়ার যে দাবি শুভেন্দু করেছেন, তা অসত্য। সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা দলবদল করেছেন বলে সত্য ঘটনাকে বিকৃত করেছেন। সঙ্গে নীতি-নৈতিকতাও সব কিছু বিসর্জন দিয়েছেন তিনি। কিন্তু আমি সেই সব ঘটনার সাক্ষী। আমি মিথ্যে বলতে পারব না।’’ এর পর যোগ করেন, ‘‘সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, নেতাইয়ে যে আন্দোলন হয়েছিল, তার প্রতিটি ঘটনার সাক্ষী আমি। সিঙ্গুরে তাপসী মালিকের ঘটনা থেকে নন্দীগ্রামে ভরত মণ্ডল খুনের ঘটনা— সব কিছুই চোখের সামনে ঘটেছে। মমতাদি কী ভাবে সেই সব আন্দোলনে লড়াই করেছিলেন, নিজের চোখে দেখেছি। তাই সেই সব ঘটনার বিকৃতি ঘটালে কখনওই তা মেনে নেব না। আমি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকি বা না থাকি, সত্যি কথা সব সময় বলব।’’

Advertisement

চুয়াল্লিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তাঁর সিংহভাগই কেটেছে মমতার সঙ্গে। তাই বিজেপি ছেড়ে আবারও তাঁর তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলেই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের। শোভন বলেছেন, ‘‘আমার তৃণমূলে ফেরা বা না ফেরা কোনও প্রশ্ন নয়। আমি আমার মতামত প্রকাশ করেছি বিরোধী দলনেতা সত্য ঘটনা বিকৃত করছেন দেখে। সত্য ঘটনার বিকৃতি তিনি যত বার করবেন, তত বার আমি সত্য প্রকাশ্যে আনব।’’ সঙ্গে সংযোজন, ‘‘১৯৮০ সালে আমার ছাত্র রাজনীতি শুরু মমতাদির হাত ধরে। ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি প্রথম বার সংসদ সদস্য হন, আর পরের বছর জানুয়ারি মাসেই তাঁর উপর প্রাণঘাতী আক্রমণ হয়। ১৯৯০ সালের অগস্ট মাসে হাজরা মোড়ে লালু আলম তাঁর ওপর প্রাণঘাতী হামলা করে। ১৯৯৫ সালে গার্ডেনরিচে মমতাদির উপর আবার হামলা হয়। সেই ঘটনার সাক্ষী বিধানসভার বর্তমান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিন তিনি যে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, সেই গাড়িতে মমতাদি ছিলেন। সেই গাড়িতেই তাঁর উপর হামলা হয়। কোনও ঘটনা আমার অজানা নয়। তাই আমার জানা কোনও ঘটনা বিকৃত করলে তার প্রতিবাদ আমাকে করতেই হবে।’’

মমতার প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ‘কানন’ বলেছেন, ‘‘আমার জীবনের ৯০% প্রাপ্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে। বর্তমানে দলবদল করে বিরোধী দলনেতা তাঁর ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লাগাতার কুরুচিকর আক্রমণ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে তাঁর ভাষা ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। তাই তিনি যত বার কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা কথা বলবেন, আমাকেও তত বার সত্য নিয়ে সরব হতে হবে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement