রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ কংগ্রেসের নিজস্ব চিত্র।
মাদক-কাণ্ডে বলিউড অভিনেতা শাখরুখ খানের ছেলে আরিয়ানের গ্রেফতারের ঘটনায় মুখ খোলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফেও এই নিয়ে কোনও বক্তব্য সামনে আসেনি। এই নীরবতা নিয়েই এ বার প্রশ্ন তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর প্রশ্ন, বাংলার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ করে যাঁকে কাজে লাগানো হল, সেই ‘কিং খানের’ পরিবারের সঙ্গে এমন ঘটনার সময়ে কেন মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ করছেন না? তৃণমূল অবশ্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকেই পাল্টা কটাক্ষ করেছে।
উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে গাড়ির চাকায় পিষে কৃষক-মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের দ্রুত শাস্তি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার সারা দেশে মৌনী অবস্থানের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। বহরমপুরে গাঁধী মূর্তির নীচে অবস্থানে যোগ দেওয়ার অবসরেই অধীরবাবু এ দিন শাহরুখ-পুত্রের প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আরিয়ান বলছে, তাকে ফাঁসানো হয়েছে। শাহরুখ খানের পরিবারের সঙ্গে গত কয়েক দিনে যা ঘটেছে, যে সঙ্কটের মধ্যে তারা পড়েছে, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলুন! কিং খানকে দিদি নিজের স্বার্থে তো ব্যবহার করেছেন, আজ কেন চুপ হয়ে গেলেন?’’ মুম্বইয়ের কলাকুশলীদের একাংশ এনসিবি-র কাজকর্ম নিয়ে সরব হয়েছেন, মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রীও এই ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির হাত থাকার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু বাংলার যুব সম্প্রদায়কে কাছে টানতে যে রাজ্যের সরকার শাহরুখকে কাজে লাগাল, তারা কেন নীরব— এই প্রশ্নই তুলেছেন লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা। সামাজিক মাধ্যমেও এই সংক্রান্ত পোস্ট করেছেন তিনি।
তৃণমূল নেতা ও রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় অবশ্য বলেন, ‘‘অধীরবাবু কি বিশেষজ্ঞ? তিনি যা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেবেন, তারই প্রতিক্রিয়া আমাদের দিতে হবে, এতটা গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই!’’ সুখেন্দুবাবুর সংযোজন, ‘‘শাহরুখের ছেলের ঘটনায় তদন্ত চলছে। দলের এই বিযয়ে কিছু বলার থাকলে আলোচনা করে দলই সেটা ঠিক করবে।’’
অবস্থান থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এ দিন আরও প্রশ্ন তুলেছেন, লখিমপুরের ঘটনার পরে প্রতিবাদ করেই তৃণমূল আবার চুপ হয়ে গেল কেন? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি নিয়েই বা কেন মুখ্যমন্ত্রী নীরব? শহরের গাঁধী মূর্তি বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও দফতরের সামনে অবস্থানের কর্মসূচি নিয়েছিল কংগ্রেস। কলকাতায় রাজভবনের সামনে এ দিন আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, সুমন পাল, রানা রায়চৌধুরীদের নেতৃত্বে অবস্থানে বসেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। কিছু ক্ষণ রাস্তা জুড়ে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বসে থাকেন তাঁরা। তার পরে পুলিশ জনাপঞ্চাশ কংগ্রেস নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যায়।