সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন। —ফাইল চিত্র।
সঙ্কটের মাঝে সঙ্ঘাত এড়িয়ে চলার নীতিই নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের সরকার তথা শাসক দল। কিন্তু বাংলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যে ভাবে আচমকা আন্তঃমন্ত্রক প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার, তাতে আর থেমে থাকল না রাজনৈতিক চাপানউতোর। কেন্দ্রীয় সরকারকে মঙ্গলবার তীব্র আক্রমণ করল রাজ্যের শাসক দল। সংসদের দুই কক্ষের তৃণমূল দলনেতাই তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে।
৪টি রাজ্যে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। মহারাষ্ট্রে দল পাঠানো হয়েছে মুম্বই এবং পুণের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য। জয়পুরের পরিস্থিতি দেখার জন্য রাজস্থানে পাঠানো হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে পাঠানো হয়েছে ইনদওরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য। আর পশ্চিমবঙ্গে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য। অর্থাৎ যে ৪ রাজ্যে প্রতিনিধিদল পাঠানো হল, তার মধ্যে মধ্যপ্রদেশ শুধু বিজেপি শাসিত। বাকি সব রাজ্যেই বিরোধীদের সরকার। এই বিষয়টিকে তুলে ধরেই আক্রমণ শুরু করেছে তৃণমূল। কেন বেছে বেছে বিরোধী দলগুলির হাতে থাকা রাজ্যগুলিতেই পাঠানো হল কেন্দ্রীয় দল? কেন বিজেপি বা তার শরিকদের হাতে থাকা রাজ্যগুলিতে পাঠানো হল না? প্রশ্ন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের।
রাজ্যসভার তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এ দিন কণ্ঠস্বর তুঙ্গে তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে। তাঁর প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শনের তালিকায় গুজরাত বা তামিলনাড়ুর একটা জেলাও নেই কেন? উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত বা তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক বলে তাঁর দাবি। তা সত্ত্বেও ওই সব রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল কেন পাঠানো হচ্ছে না? প্রশ্ন ডেরেকের। তাঁর কথায়, ‘‘সব রাজ্য একসঙ্গে মিলে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে একটা সর্বাত্মক লড়াই লড়ছে। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, কেন্দ্রীয় সরকার লড়ছে কয়েকটা রাজ্যের বিরুদ্ধে।’’
আরও পড়ুন: মমতার পাশে কংগ্রেস, ধনখড়কে কটাক্ষ করে ঝাঁঝালো টুইট অভিষেক সিঙ্ঘভির
লোকসভার তৃণমূল দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদল যদি কোনও রাজ্যে আসতে চায়, প্রথা মেনে, যথাযথ ভাবে, তা হলে তাঁরা স্বাগত। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর লেখা চিঠিতে কালকে প্রধানমন্ত্রীকে এই কথা জানিয়েছেন। দিল্লির প্রতিনিধিরা আগে পৌঁছে যাচ্ছেন, তার পরে মুখ্যমন্ত্রী খবর পাচ্ছেন, এটা কখনওই প্রত্যাশিত নয়, এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ সুদীপ আরও বলেন, ‘‘সাতটি জেলাকে সামনে তুলে নিয়ে এসে প্রত্যেকটি জেলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা গিয়ে কী অনুসন্ধান করবেন? তাঁরা কী দেখতে চান? কী তাঁদের উদ্দেশ্য?’’ রাজ্য সরকারের আলোচনা করে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো উচিত ছিল বলে সুদীপের মত। এই পরিদর্শন যদি রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে হত, তা হলে সবটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন: রাস্তায় নেমে লকডাউন নিয়ে সচেতনতা প্রচার মুখ্যমন্ত্রীর
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)