কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল কেন এখনও জেলা তৃণমূলের সভাপতি— বীরভূমের সিউড়িতে দাঁড়িয়ে অন্য বিরোধীদের মতো একই প্রশ্ন তুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। একই সঙ্গে বগটুইয়ের মিহিলাল শেখও এ দিন দেখা করেন তাঁর সঙ্গে। পরে মিহিলাল জানান, দোষীরা যাতে দ্রুত শাস্তি পায়, সে জন্য শাহ তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন।
শুক্রবার সিউড়ির বেণীমাধব ইনস্টিটিউশনের মাঠের জনসভায় দুর্নীতি, অনুপ্রবেশ, সন্ত্রাস, পরিবারতন্ত্র— এমন নানা বিষয় তুলে তৃণমূল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বিঁধেছেন অমিত শাহ। বক্তব্যের মাঝেই অনুব্রতের নাম না-নিয়ে শাহ উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “আমি আজ আপনাদের জিজ্ঞেস করতে চাই, যাকে ভারত সরকার গরু পাচার কাণ্ডে জেলে ভরেছে, তেমন নেতাকে কেন এখনও জেলা সভাপতি করে রাখা হয়েছে?”
যা শুনে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেউ অভিযুক্ত মানেই তিনি দোষী নন। সেটা প্রমাণ সাপেক্ষ। বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। দল মনে করেছে, তিনি (অনুব্রত) আমাদের সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছেন, আইনের বিচারে তিনি এক দিন মুক্তি পাবেন। তাই জেলা সভাপতি হিসেবে তিনি আছেন।’’
তবে শুধু কেষ্ট নয়, বীরভূম নিয়ে আরও নানা বিষয় এ দিন উঠেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে। বিশেষ করে বীরভূমে গরু পাচারের নালিশ ও সন্ত্রাস প্রসঙ্গ এসেছে একাধিক বার। শাহের দাবি, ‘‘দিদির শাসনে বাংলা বোমা বিস্ফোরণের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি এনআইএ বীরভূমে ৮০ হাজারের বেশি ডিটোনেটর এবং ২৭ হাজার কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বাজেয়াপ্ত করেছে। যদি এনআইএ এটা ধরতে না পারত, তা হলে কত মানুষের জীবন বিস্ফোরণে যেত কেউ বলতে পারে না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যে বীরভূমের স্বাধীনতা আন্দোলনে বড় ভূমিকা ছিল, সেই বীরভূমকে সন্ত্রাসের কেন্দ্র বানানোর কাজ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস।’’ তিনি প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘বীরভূমবাসী বলুন, বাংলা থেকে সন্ত্রাস মুক্তি চাইছেন কি না? বোমা বিস্ফোরণ বন্ধ করতে চাইছেন কি না? গরু পাচার বন্ধ করতে চান কি না? দুর্নীতি বন্ধ করতে চান কি না?’’
বক্তব্যের শুরুতে বগটুই হত্যাকাণ্ডে নিহতদের শ্রদ্ধা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শাহের সঙ্গে দেখা করেন বগটুইয়ের নিহতদের পরিবারের সদস্য মিহিলাল শেখ। সিউড়িতে দলের নতুন কার্যালয় উদ্বোধনের পরে বেরিয়ে মিহিলালের সঙ্গে কথা হয় শাহের।