সেই সঙ্গে পাহাড়বাসীকে আশ্বস্ত করে অনীত ফের জানিয়ে দিয়েছেন, বিনয় তামাংয়ের মতো আধুনিক তথা নতুন চিন্তার নেতাই পাহাড়ের প্রয়োজন।
পাহাড়ের মানুষের নিজেদের নেতা বাছাই করার চূড়ান্ত সময় এসে গিয়েছে— শুক্রবার এই মন্তব্য করলেন জিটিএ চেয়ারম্যান তথা বিনয় তামাংপন্থী মোর্চার সচিব অনীত থাপা।
এ দিন সকালে গাড়িধুরায় একটি অনুষ্ঠানে অনীত বলেছেন, ‘‘উন্নয়ন, সততা, এগিয়ে থাকার চিন্তাভাবনা দেখে পাহাড়বাসীকে নেতা ঠিক করতে হবে। মানুষের শান্তিশৃঙ্খলা, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, পর্যটন চাই, নাকি মিথ্যা ছল-কপটের রাজনীতি পছন্দ— তা বুঝতে হবে। এর থেকেই পাহাড়ে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ঠিক হবে।’’
সেই সঙ্গে পাহাড়বাসীকে আশ্বস্ত করে অনীত ফের জানিয়ে দিয়েছেন, বিনয় তামাংয়ের মতো আধুনিক তথা নতুন চিন্তার নেতাই পাহাড়ের প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘সাড়ে তিন বছর পর কেউ কেউ পাহাড়ে এসে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে তৃণমূলের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলছেন। যা বিনয় তামাং ২০০৭ সালেই বলে এবং করে দেখিয়েছেন। এর থেকে নেতা কী রকম হওয়া দরকার, তা স্পষ্ট।’’
পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, যত দিন যাচ্ছে, পাহাড়ের দু’পক্ষের লড়াইটা আরও জোরদার হয়ে উঠছে। মিছিল, মিটিংয়ের পরে এখন জনসভা, পাল্টা জনসভার পালা চলছে। কাল, রবিবার তরাইয়ের সুকনায় বিনয়, অনীতদের জনসভা। আর ডুয়ার্সের বীরপাড়ায় বিমল, রোশন গিরিদের সভা। দু’পক্ষই নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেই চলছে। সেই সঙ্গে চলছে রোজই বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতির লড়াই। গত কয়েক দিন ধরে শিলিগুড়ির বিধান রোডের একটি হোটেলে আছেন মোর্চা নেতা গুরুং। সেখানে বসেই তিনি পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সে যোগাযোগ রেখে সাড়ে তিন বছর পর নতুন করে সংগঠন সাজানোর কাজ করছেন বলে মোর্চা সূত্রে খবর। গুরুংপন্থীদের সচিব রোশনের কথায়, ‘‘ওঁরা তো নিজেরাই বিমল গুরুংয়ের কল্যাণে নেতা হয়েছেন। আর জিটিএ-র চেয়ারে বসেই দুর্নীতি শুরু করে দিয়েছেন। লোকসভা থেকে বিধানসভা, একটা ভোটে যাঁরা জিততে পারে না, তাঁদের নিয়ে কম কথা বলাই ভাল।’’ পাহাড়ের এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন শিলিগুড়ির বাম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত কয়েক বছর ধরে বিজেপি যে ভাবে পাহাড়ে ভোটের রাজনীতি করেছে, তৃণমূল এ বার তা শুরু করেছে। এতে পাহাড় বা পাহাড়বাসীর কল্যাণ হওয়াটা মুশকিল।
সেই সঙ্গে অশোকবাবুর দাবি, ‘‘গুরুংয়ের বিরুদ্ধে খুন থেকে দেশদ্রোহিতা—বহু মামলা রয়েছে। সেগুলির কী হল, তা মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে হবে।’’ তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের নেতা তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘অশোকবাবুদের ঘোলাজলে মাছ ধরতে হবে না। পাহাড় নিয়ে বামেদের ভাবতে হবে না।’’