প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী কে? এই প্রশ্নের নির্দিষ্ট উত্তর দলের কাছে এখনও নেই। তবে রাজনীতির লোকেদের বাইরে খেলার মাঠের এক ‘দাদা’ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে আছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। তাঁর সঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের অল্পস্বল্প কথাও শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আর যাঁদের নাম হাওয়ায় ভাসছে, তাঁদের মধ্যে খুব অপ্রত্যাশিত কোনও চমক নেই। যেমন দিলীপ ঘোষ, স্বপন দাশগুপ্ত, অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ।
খেলার মাঠের ‘দাদা’ এবং বিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপি মহলে চর্চা চলছে বেশ কিছু দিন ধরে। তার মাত্রা সম্প্রতি বেড়েছে। তবে তাঁকে মুখ হিসেবে তুলে ধরা হবে নাকি শুধু প্রচারের জন্য সামনে আনা হবে, সেটা এখনও খুব স্পষ্ট নয়। দল এবং ‘দাদা’, কারও তরফেই কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘সৌরভের সঙ্গে দলের কথা হয়েছে কি না, আমার জানা নেই।’’ সৌরভের ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, দেশ অনেক বড় সমস্যার মধ্যে আছে। এখন এ সব কথার সময় নয়।
মুখ্যমন্ত্রিত্বের সম্ভাব্য মুখ হিসেবে বিজেপিতে দিলীপবাবুর নামও বহুচর্চিত। তিনি সঙ্ঘ থেকে উঠে আসা।
অল্প সময়েই রাজ্য দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে সভাপতি হয়েছেন। রাজ্য সভাপতি পদে এক বারের মেয়াদ শেষ করে সম্প্রতি দ্বিতীয় দফার দায়িত্ব পেয়েছেন। বিধানসভা ও লোকসভা, দু’টি ভোটে দাঁড়িয়েই জিতেছেন। সব মিলিয়ে আপাতত রাজ্য বিজেপির মুখ হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তা কি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হয়ে উঠতে পারে? দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলে ভোটের আগে এ সব ঘোষণার রেওয়াজ নেই। আগে তো ভোটে জিতি। তার পর মুখ বা মুখ্যমন্ত্রীর নাম সকলেই জেনে যাবেন।’’
দিল্লিবাসী স্বপনবাবু অধুনা রাজ্য বিজেপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিশিষ্ট জন। রাজ্যসভায় তিনি রাষ্ট্রপতি মনোনীত সাংসদ। তবে কলকাতায় তিনি ঘন ঘন আসেন, বিজেপির বিভিন্ন মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এমনকি জেলায় জেলায় ঘুরে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিশিষ্ট এবং শিক্ষিত জনেদের সঙ্গে আলোচনাচক্রেও প্রায়ই যোগ দেন তিনি। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মতামত দলে মান্যতা পায়। অনেকের ধারণা, রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠী রাজনীতি থেকে যে হেতু তিনি দূরে এবং শিক্ষিত সমাজে তাঁর নিজস্ব একটি অবস্থান আছে, তাই তাঁকে বিজেপি তুলে আনতে পারে। এ বিষয়ে স্বপনবাবুর সতর্ক মন্তব্য, ‘‘মুখের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁদের সিদ্ধান্ত সকলকে মানতে হবে। এর বেশি আর কিছু বলার নেই।’’
সঙ্ঘ থেকে আসা অনির্বাণবাবু প্রচারে সামনের সারির লোক না হলেও সংগঠনে ওজন আছে। অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। তিনি অবশ্য নিজেকে এই দৌড়ের ‘কালো ঘোড়া’ বলে মানতে রাজি নন। তাঁর কথা, ‘‘ও সব সর্ম্পূণ গুজব। সারা বছর বাংলার মানুষের পাশে থাকা কেউই হয়তো হবেন।’’ সে ক্ষেত্রে কি দিলীপবাবুর পাল্লা ভারী হবে? অনির্বাণবাবুর উত্তর, ‘‘সময় সব বলবে।’’
অনেকটা পিছনে থেকেও জল্পনায় টিকে আছেন দু’দফায় সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তবে রাজ্য বিজেপির মূল স্রোতের সঙ্গে তাঁর নিত্য যোগাযোগ বা সম্পর্ক, কোনওটাই খুব নিবিড় নয়। বাবুলের মন্তব্য, ‘‘আমি এ নিয়ে একটি শব্দও খরচ করব না।’’
আরও পড়ুন: সু্স্থতার হার ৫৮ শতাংশ, নতুন করে আক্রান্ত ৪৪১ জন, মৃত ১১