Justice Abhijit Gangopadhyay

৩২০০০ চাকরি বাতিল: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন নির্দেশ স্থগিত রইল, কী কী বহাল, এক নজরে

২০১৬ সালে প্রাথমিকের শিক্ষক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন মোট ৪২,৫০০ জন। এর মধ্যে প্রশিক্ষিত ৬৫০০ জনকে নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৩ ১৭:৪৮
Share:

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন নির্দেশ বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। ফাইল চিত্র।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৩২০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় যে, আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অথবা আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে। একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ তার অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনেই চলতে হবে।

Advertisement

২০১৬ সালে প্রাথমিকের শিক্ষক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন মোট ৪২,৫০০ জন। এর মধ্যে প্রশিক্ষিত (শিক্ষণের ডিগ্রি বা ডিএলএড থাকা) ৬৫০০ জনকে নিয়ে বরাবরই কোনও বিতর্ক ছিল না। গত শুক্রবার বাকি ৩৬ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করা হয়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, নতুন করে ইন্টারভিউ পাশ করলে তাঁরা চাকরি ফিরে পাবেন। না হলে চাকরি খোয়াতে হবে। তার পরে জানা যায়, ওই সংখ্যাটা ৩৬ হাজার নয়, ৩২ হাজার। লেখায় ভুল (টাইপোগ্রাফিক্যাল এরর) হয়েছে!

২০১৪ সালে ১ লক্ষ ২৫ হাজার চাকরিপ্রার্থী প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে যাঁদের মধ্যে থেকে ৪২ হাজার ৫০০ জন চাকরি পান। প্রিয়ঙ্কা নস্কর-সহ ১৪০ জন চাকরিপ্রার্থী ২০১৬ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে মামলা করেন। তাঁদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আদালতে জানান, এই মামলাকারীদের থেকে কম নম্বর পেয়ে অপ্রশিক্ষিত অনেকেই চাকরি পেয়েছিলেন। এই মামলাতেই উঠে আসে ইন্টারভিউ বিতর্ক। অভিযোগ ওঠে, নিয়ম অনুযায়ী ইন্টারভিউয়ে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নেওয়ার কথা থাকলেও বহু ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন জেলায় যাঁরা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন, তাঁদের তলব করে গোপন জবানবন্দিও নথিবদ্ধ করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তার ভিত্তিতেই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের চাকরি বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারাদের একাংশ। সোমবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলা করা হয়।

Advertisement

শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে তার নির্দেশে জানিয়েছে, আপাতত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বহাল থাকবে। তাঁরা আগের কাঠামো অনুসারেই বেতন পাবেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, চাকরিহারারা চার মাসের জন্য পার্শ্ব শিক্ষকের হারে বেতন পাবেন। তবে ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের রায়কে বহাল রেখে এ-ও জানিয়েছে যে, এই ৩২ হাজার শিক্ষককে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হবে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারলে, এই ৩২ হাজার জনের চাকরিজীবনে কোনও ছেদ পড়বে না। ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ ১ লক্ষ ২৪ হাজার প্রার্থীর মধ্যে চাকরি পেয়েছিলেন ৪২ হাজার ৫০০ জন। সে ক্ষেত্রে টেট উত্তীর্ণ ৮২ হাজার ৫০০ জন চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে এই ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থী, অর্থাৎ মোট ১১৪,৫০০ চাকরিপ্রার্থী নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। সেপ্টেম্বর মাসে এই মামলা আবার শুনবে ডিভিশন বেঞ্চ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement