থানা থেকে ডাক্তার সোজা অজ্ঞাতবাসে

পুলিশ জানায়, গার্ডেনরিচ থানা এলাকার ফতেপুর ভিলেজ রোডের বাসিন্দা আট বছরের শিশু শুভম তিওয়ারি ভুল চিকিৎসায় মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তার পরিবারের লোকজন চিকিৎসক অমিতাভবাবুকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে আটকে রেখে মারধর করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০৪:০৪
Share:

নিগ্রহ: স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে আক্রান্ত চিকিৎসক অমিতাভ মণ্ডল। মঙ্গলবার গার্ডেনরিচে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

পুলিশের হাত থেকে গভীর রাতে ছাড়া পেলেও বাড়িতে ফিরলেন না শিশুমৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ও প্রহৃত চিকিৎসক অমিতাভ মণ্ডল। ফলে মঙ্গলবারের পরেও বুধবার বন্ধ ছিল তাঁর বাড়ির চেম্বার।

Advertisement

পুলিশ জানায়, গার্ডেনরিচ থানা এলাকার ফতেপুর ভিলেজ রোডের বাসিন্দা আট বছরের শিশু শুভম তিওয়ারি ভুল চিকিৎসায় মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তার পরিবারের লোকজন চিকিৎসক অমিতাভবাবুকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে আটকে রেখে মারধর করেন। পরে পুলিশ গিয়ে ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন ওই নিগৃহীত চিকিৎসক।

বুধবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে অমিতাভবাবু জানান, তিনি বাড়িতে ফেরেননি। কোথায় আছেন, তা বলা যাবে না। চেম্বার খুলে কবে আবার চিকিৎসা শুরু করবেন, তা জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, ‘‘আপাতত বাইরে আছি। তাই চেম্বার বন্ধ। কবে ফিরতে পারব, জানি না।’’ মঙ্গলবারের ঘটনাকে মর্মান্তিক আখ্যা দিয়ে চিকিৎসক জানান, শিশুটির মৃত্যুতে তিনি মর্মাহত।

Advertisement

ওই চিকিৎসকের অবহেলায় শুভমের মৃত্যু হয়েছে বলে মঙ্গলবার রাতেই শিশুটির বাবা অজয় তিওয়ারি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত চালাচ্ছে। পুলিশ জানায়, শিশুটির চিকিৎসা সংক্রান্ত সব নথি বাজেয়াপ্ত করে পাঠানো হবে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের বিশেষজ্ঞদের কাছে। তাঁদের পরমার্শ অনুযায়ী তদন্ত হবে। বুধবার পর্যন্ত ময়না-তদন্তের রিপোর্ট তদন্তকারীদের হাতে আসেনি। আজ, বৃহস্পতিবার ময়না-তদন্তের চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করার কথা তদন্তকারীদের। বুধবার শিশুটির পরিবারের লোকজন গার্ডেনরিচ থানায় কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেন। পরে শিশুটির বাবা অজয়বাবু জানান, পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ জানতে ১০ দিন সময় লাগবে।

লালবাজার জানায়, সোমবার বিকেলে খেলার সময় শুভম বাঁ কুঁচকিতে চোট পায়। সন্ধ্যায় তাকে রবীন্দ্রনগরের নিউ মধ্য রামদাসহাটিতে অমিতাভবাবুর চেম্বারে নিয়ে যান অজয়বাবু। অমিতাভবাবু শিশুটিকে পরীক্ষা করে চারটি ওষুধ দেন খাওয়ানোর জন্য। অভিযোগ, রাতে শুভমের অবস্থার অবনতি হয়। মঙ্গলবার ভোরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শরৎ বসু রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকেরা শুভমকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের লোকজন শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। মৃত্যুর শংসাপত্রের জন্য অমিতাভবাবুকে তাঁর বাড়ি থেকে ফতেপুর ভিলেজ রোডে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান অজয়বাবু। অভিযোগ, সেখানে অমিতাভবাবুকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পরে তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement