ফাইল ছবি
অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠছে বার বার। এবং সেই সব অভিযোগ জানিয়ে পরের পর মামলাও হচ্ছে। সেই আইনি টানাপড়েনে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ থমকে যাচ্ছে। স্কুলগুলি কবে শিক্ষক পাবে, প্রার্থীরাই বা কবে পাবেন নিয়োগপত্র— প্রশ্ন উঠছিল আমজনতার মধ্যে। এ বার কলকাতা হাই কোর্টই প্রশ্ন তুলল, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অবস্থান বিজ্ঞপ্তির আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন? টেট-উত্তীর্ণদের ইন্টারভিউ নিয়ে তো বিজ্ঞপ্তি দরকার। বুধবার এ ব্যাপারে পর্ষদের বক্তব্য জানতে চান বিচারপতি অমৃতা সিংহ। আদালতের মতে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তা পর্ষদের ওয়েবসাইটে দেওয়া উচিত। আজ, বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে হাই কোর্টে নিজেদের বক্তব্য জানাবে পর্ষদ।
শিক্ষা শিবিরের একাংশের বক্তব্য, প্রাথমিকে নিয়োগ-জট কার্যত এক অনিঃশেষ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বচ্ছতার প্রশ্ন, নিয়োগে বিলম্ব ইত্যাদিকে ঘিরে বেশ কয়েক বার আদালতে ভর্ৎসনাও শুনতে হয়েছে পর্ষদকে। ভর্তির প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার প্রশ্নে বার বার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে চাকরিপ্রার্থীরা। বেড়েছে জট।
সম্প্রতি ৭৩৮টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ২০১৪ সালের টেটের (শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা) ভিত্তিতে ইন্টারভিউয়ের একটি তালিকা প্রকাশ করে পর্ষদ। সেই তালিকার বিরোধিতা করে হাই কোর্টে মামলা করেন তিন জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় ও রেশমী ঘোষ আদালতে জানান, ওই টেটের প্রশ্নপত্রে ভুল থাকায় মামলাকারীদের ছ’নম্বর কম দেওয়া হয়েছিল। এর আগে হাই কোর্ট সেই নম্বর যোগ করে ফের তালিকা প্রকাশ করতে বলেছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। তাই ইন্টারভিউয়ের তালিকায় মামলাকারীদের নাম নেই।
এ দিন শুনানিতে পর্ষদের কৌঁসুলি লক্ষ্মী গুপ্ত জানান, মামলাকারীদের নম্বর দেওয়া হবে এবং ইন্টারভিউয়ে ডাকাও হবে তাঁদের। তার পরেই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এর পরে যদি অন্য কোনও চাকরিপ্রার্থী একই যুক্তি দেখিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন, তা হলে কী হবে? মামলার পরে মালা কি চলতেই থাকবে? বিলম্বিত হতে থাকবে নিয়োগ? ভুগতে থাকবেন প্রার্থীরা? আদালতের পর্যবেক্ষণ, একই বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বার বার আদালতে আসবেন এবং পর্ষদ সেই সব মামলার ভিত্তিতে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে, তা হতে পারে না। আদালতে এ ভাবে একই বিষয়ে বার বার শুনানির প্রয়োজন যাতে না-পড়ে, তার ব্যবস্থা করা দরকার। পর্ষদের উচিত, এই ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা এবং
তার ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ে ডাকা।
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী শিবিরও। বুধবার নদিয়ার হাঁসখালিতে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাজকর্ম প্রসঙ্গে বলেন, “সিবিআই চাই। ওমপ্রকাশ চৌটালার মতো এখানকার তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী এবং তাঁর পুরো বাহিনী একসঙ্গে ভিতরে থাকবেন।”