কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল ছবি।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘চার্জ ফ্রেম’ কবে হবে? তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দায়ের করা মামলায় প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সাফল্যের হার নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত। শুক্রবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, ‘‘ইডির ঢিলেমির জন্য কাউকে জামিন দিতে হলে খারাপ বার্তা যাবে। অথচ ট্রায়াল শুরু করার বিষয়ে তাদের তৎপরতা চোখে পড়ে না!’’ আগামী ১৭ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন পর্যন্ত ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হবে না বলে আদালতকে জানিয়েছে ইডি।
স্কুলের নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে নিষ্কৃতি এবং রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। বৃহস্পতিবার তাঁর আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির সওয়াল, তাঁর মক্কেল এই মামলার সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নন। অভিযুক্তের তালিকায় নাম নেই। তা সত্ত্বেও আদালতের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে হাজিরা দিয়েছেন তিনি। তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। তাঁর যুক্তি, প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলছে। কিন্তু কিছুতেই তদন্ত শেষ হচ্ছে না। এই অবস্থায় অভিষেককে তদন্ত থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠির প্রেক্ষিতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর পরে তাঁর আর কোনও ভূমিকা থাকতে পারে না। মনু সিঙ্ঘভির আবেদন, আদালত তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের রক্ষাকবচ বহাল রাখুক।
অভিষেকের আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করে ইডির আইনজীবী এসভি রাজুর সওয়াল, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র কখনও শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তাঁর সঙ্গে অভিষেকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সেই লিঙ্ক পাওয়া গিয়েছে। তাই এই অবস্থায় অভিষেকের বিরুদ্ধে তদন্ত কোনও ভাবে বন্ধ করা যায় না। কুন্তল ঘোষের চিঠি বা অভিষেকের বক্তব্যের সঙ্গে এই তদন্তের কোনও যোগ নেই। নিয়োগ দুর্নীতিতে বিশাল অঙ্কের টাকা লেনদেনের হদিস পেতেই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। অর্থের বিনিময়ে চাকরি হয়েছে। এখন তদন্তকারী সংস্থাকে আটকানো উচিত নয়। কিছু না পাওয়া গেলে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়া হবে।
বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, ‘‘ইডির তদন্ত প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। আপনাদের তদন্তের গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যান দিন। কত গুলি মামলায় সফল হয়েছে ইডি? গত এক বছর ধরে বিচারের কাজ করছি। কলকাতা থেকে কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে দেখিনি। কেন ইডির চার্জ ফ্রেম করতে এত দেরি হয়? এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে? ইডির বিলম্বের কারণে অনেকে জামিন পেয়ে যান। এটা আদালতের কাছে আনন্দদায়ক নয়।’’ ইডির সওয়ালের পাল্টা অভিষেকের আইনজীবী আবার সওয়াল করতে চাইলে মামলার শুনানি পিছিয়ে ১৭ অগস্ট করা হয়।