—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আঞ্চলিক ভাষাগুলোর মাধ্যমে পঠনপাঠনে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে। কিন্তু আদৌ কি তা গুরুত্ব পাচ্ছে? প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষকদের একটা বড় অংশ জানাচ্ছেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ হতে চলল। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছিল, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই সিবিএসই পাঠ্যক্রমে সমস্ত বিষয়গুলির বই বাংলা ভাষাতেও যাতে হয়, সেটা দেখতে হবে। কেউ যদি সিবিএসই-র পাঠ্যক্রম ইংরেজিতে না পড়ে বাংলায় পড়তে চায়, তা হলে সে পড়তে পারবে। ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান, অঙ্ক-সহ সমস্ত বিষয়ই বাংলায় পড়তে চাইলে পড়তে পারবে। কিন্তু ২০২৪- ২৫ শিক্ষাবর্ষে আদৌ তা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে ঘোর সন্দিহান সিবিএসই শিক্ষকরাই।
সিবিএসই শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সিবিএসই-র সমস্ত পাঠ্যপুস্তক তৈরি করে ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)। সিবিএসই যদি আঞ্চলিক ভাষাতেও পড়ানোর কথা ভাবে তা হলে ইংরেজি বইগুলোর বাংলা অনুবাদ করার কথা এনসিইআরটি-রই।
সিবিএসই পাঠ্যক্রম পড়ানো হয় জিডি গোয়েঙ্কা পাবলিক স্কুলে। তার অধ্যক্ষ সুজাতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণত দেওয়ালির পরেই নতুন শিক্ষাবর্ষের বই বেরোতে শুরু করে। এ বার ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম ২০২১- ২২ সালে গঠিত ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী হচ্ছে। ফলে পাঠ্যবইতে বেশ কিছু পরিবর্তনও হচ্ছে। আমাদের কাছে এমন কোনও খবর নেই যে এনসিইআরটি সমস্ত পাঠ্যপুস্তকগুলো বাংলায় অনুবাদ করতে শুরু করেছে। হয়তো কিছু বইয়ের অনুবাদ শুরু হতে পারে।’’
সুজাতার মতে, শুধু বাংলা অনুবাদ করলেই হবে না। যাঁরা সিবিএসই অনুমোদিত স্কুলে পড়ান, তাঁরা ইংরেজিতে পড়ান। এই বাংলা অনুবাদ হওয়া বইগুলোতে বাংলায় পড়ানোর জন্য বাংলায় পড়াতে পারেন এমন শিক্ষকও প্রয়োজন। তাঁর প্রশ্ন, এই সব পরিকাঠামো আগামী শিক্ষাবর্ষের মধ্যে হয়ে যাবে তো?
শিক্ষাবিদ তথা কলকাতার সিবিএসই স্কুলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত থাকা ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কয়েকটা বইয়ের বাংলা অনুবাদ শুরু হয়েছে শুনেছি। এখন এমন প্রযুক্তি এসেছে যে ইংরেজি বই থেকে বাংলা করতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। পড়ানোর ক্ষেত্রেও ইংরেজিতে যাঁরা পড়াবেন, তাঁরা বাংলায় পড়ানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে নিতে পারবেন সহজেই। কাজেই উদ্যোগ শুরু হলে তা কার্যকর করতে বেশি সময় লাগার কথা নয়।’’
অল ইন্ডিয়া ফেডারেশেন অব এডুকেশনাল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, ‘‘সিবিএসই পাঠ্যক্রম দ্রুত বাংলায় চালু করতে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, সিবিএসই ডিরেক্টরের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। যে বইগুলো বাংলায় তৈরি হবে, সেগুলো বাংলা ভাষায় পারদর্শী শিক্ষাবিদদের সাহায্যে করতে হবে। রাজ্যের সিবিএসই স্কুলগুলোকেও এই বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে। এই বিষয়টা দেখার জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি লিখেছি।’’