বোলপুরে তৃণমূলের কার্যালয়ে কালীপুজোয় প্রতিমাকে গয়না পরাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজো তাঁর জেলেই কেটেছে। কালীপুজোতেও জেলমুক্তির সম্ভাবনা ক্ষীণ। বীরভূম জেলা তৃণমূলের এ বারে তাই একটাই আলোচনা, ফি বছর বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে ঘটা করে যে শ্যামাপুজো করতেন অনুব্রত মণ্ডল, তার কী হবে?
কালীপুজো ২৪ অক্টোবর। অনুব্রতকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানোর কথা ২৯ তারিখ। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, বোলপুরে ‘কেষ্টদা’র পুজোর কী হবে? এই পুজোর জাঁকজমকই আলাদা। কালীমূর্তিকে নিজের হাতে সোনার গয়না পরাতেন অনুব্রত। এর আগে এক বার মা, অন্য বার স্ত্রী মারা যাওয়ার জন্য তিনি নিজের হাতে এই কাজ করতে পারেননি। তবে প্রতিবারই উপস্থিত থেকে পুজোর যাবতীয় আয়োজন সেরেছেন অনুব্রত। কিন্তু এ বছর গরু পাচার মামলায় তিনি সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। তবে, পুজো বন্ধ হবে না, জানিয়ে দিচ্ছেন অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ, বোলপুরের বিধায়ক ও মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। তাঁর কথায়, ‘‘পুজো যেমন হয় তেমনই হবে। দলের কর্মীরাই দায়িত্ব নিয়ে সেই পুজোর আয়োজন করবেন।”
কেষ্ট থাকতে কেমন জাঁক ছিল পুজোর? দল সূত্রেই বলা হচ্ছে, ২০২০ সালে করোনার বছরেও কালীমূর্তিকে ৩০০ ভরির বেশি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছিল। গত বছর সোনার মুকুট, বাউটি, বাজুবন্ধন, চুর, কানের দুল, গলার হার মিলিয়ে প্রায় ৫৭০ ভরি সোনার গয়নায় কালীমূর্তিকে সাজিয়েছেন অনুব্রত নিজে। ১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হওয়া পুজোয় এত জাঁক আগে হয়নি বলেই দাবি দলের অনেকের। তাই চন্দ্রনাথ যা-ই বলুন, দলের কর্মীদের কাছেও প্রশ্ন, কেষ্ট-বিহীন পুজোর জাঁক কি আদৌ থাকবে?
আরও একটি বিষয়ে এ বারে সতর্ক দল। যে বিপুল গয়নায় শেষবার মূর্তি সাজান কেষ্ট, তার বাজারদর তিন কোটি টাকারও বেশি। তিনি এত সোনার গয়না কোথা থেকে পেলেন, তা ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের নজরবন্দি। সে গয়না দিয়েছিলেন যে ব্যবসায়ী, তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা। ফলে, এ বার কালীপুজো হলেও গয়না কত থাকবে, তা খোলসা করতে চাননি চন্দ্রনাথ। জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘কালীপুজো নিয়ে আমরা খুব তাড়াতাড়ি বৈঠকে বসব। সেখানেই সমস্ত কিছু আলোচনা করা হবে।”