পঞ্চায়েতের ত্রিস্তরে ভাতা যেটুকু বেড়েছে তা তৃণমূল জমানাতেই। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব শেষ হয়েও শেষ হচ্ছে না। আদালতে মামলা চলায় জয়ীরাও এখনও ঠিক জয়ী নন। কিন্তু নির্বাচনের জয়ের জন্য এত লড়াইয়ের পরে কত টাকা পান গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদের সদস্যরা? একে অবশ্য বেতন বলা হয় না। বলা হয় সাম্মানিক। পঞ্চায়েত প্রধান থেকে জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা মাসে কত টাকা সাম্মানিক পান সরকারি কোষাগার থেকে? পরিমাণ জানলে অবাকই হতে হয়।
বাম জমানায় সাম্মানিকের হার ছিল খুবই কম। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরেও সেই হারেই সাম্মানিক দেওয়া হত। বৃদ্ধি পায় ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে। সেই সময় পর্যন্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের সাধারণ সদস্যেরা কোনও সাম্মানিকই পেতেন না। কোনও বৈঠকে যোগ দিতে এলে আসা-যাওয়ার খরচ বাবদ ১৫০ টাকা করে দিত সরকার।
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যের প্রথম পঞ্চায়েত সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেই তিনি তিন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সাম্মানিক বৃদ্ধির ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে ঠিক করে দেন সকল সদস্য প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা করে পাবেন। সরকারের পক্ষে এ-ও জানানো হয়, জেলা পরিষদের সভাধিপতিরা মাসে ৩,৫০০ টাকার বদলে নতুন হারে ৫,০০০ টাকা, সহকারী সভাধিপতিরা ৩,২০০ টাকার বদলে ৪,০০০ টাকা এবং কর্মাধ্যক্ষেরা ৩,০০০ টাকার বদলে ৪,০০০ টাকা পাবেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ভাতা ২,৮০০ থেকে বেড়ে হচ্ছে ৩,৫০০ টাকা। পঞ্চায়েত প্রধানেরা ২০০০ টাকার বদলে ৩,০০০ টাকা মাসিক ভাতা পাবেন। পঞ্চায়েতের তিন স্তরের সদস্যদের মুখে হাসি ফুটেছিল।
২০১৮ সালে গ্রামবাংলার ভোটে বিপুল জয় পায় তৃণমূল। এর পরে ২০১৯ সালে আবার বাড়ানো হয় তিন স্তরের সাম্মানিক। লোকসভা নির্বাচনের পরে সেই ঘোষণা করে নবান্ন। তখন পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়। সেই সময়ে এক লাফে টাকার অঙ্ক অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় তৃণমূল সরকার। একই সঙ্গে ঠিক হয় তিনটি স্তরে সাধারণ সদস্যদের সাম্মানিক আলাদা আলাদা হবে। আগে যেটা সকলের জন্য ১,৫০০ টাকা ছিল। এর পরে আর বাড়েনি।
বেতন নয়, দেওয়া হয় সাম্মানিক।
এখন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানেরা প্রতি মাসে পান ৫,০০০ টাকা। সাধারণ সদস্যেরা ৩,০০০ টাকা। পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে সভাপতি ৬,০০০ টাকা, কর্মাধ্যক্ষ ৫,০০০ টাকা এবং সাধারণ সদস্যেরা মাসে ৩,৫০০ টাকা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাসে পান ৯,০০০ টাকা। কর্মাধ্যক্ষ ৭,০০০ এবং সাধারণ সদস্যেরা ৫০০০ টাকা।