ফের বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা। —ফাইল চিত্র।
ভিন্রাজ্যে আলু ‘রফতানি’ নিয়ে জটিলতা না-কাটলে সোমবার থেকে তাঁরা ধর্মঘটে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আলু ব্যবসায়ীরা। এর জেরে মঙ্গলবার থেকে ফের খোলাবাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানিয়েছেন, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই। জট কাটাতে সোমবার একটি বৈঠকও ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে আমরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। আগামিকাল (সোমবার) এই নিয়ে বৈঠকে বসছি। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই। সমস্যা হচ্ছে, ৩০-৪০ জন অসাধু ব্যবসায়ীর হাতে মজুত আলু আটকে পড়েছে। আমরা স্টোর ধরে ধরে তালিকা তৈরি করছি। আগামিকাল এই বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডাকছি।’’ আলু ব্যবসায়ীদের একাংশ কি সরকারকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করছেন? প্রশ্নের জবাবে বেচারাম বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিক ভাবে তেমনটাই আশঙ্কা করছি।’’
চলতি বছর এমনিতেই রাজ্যে আলুর দাম বেশ চড়া। এই পরিস্থিতিতে দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি ভিন্রাজ্যে আলু ‘রফতানি’র ক্ষেত্রে কড়াকড়ি শুরু হয়েছিল। তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন আলু ব্যবসায়ীরা। এর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকেও বসেছিল সরকার পক্ষ। সেই বৈঠকে সরকার এবং ব্যবসায়ী, দু’পক্ষই আলুর দাম কমাতে উদ্যোগী হয়। তাতে বাইরের রাজ্যে আলু পাঠানোর ক্ষেত্রে কড়াকড়ি কিছুটা শিথিলও হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সম্প্রতি আবার নতুন করে কড়াকড়ি চালু হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে শনিবার হুগলির তারকেশ্বরে আলু ব্যবসায়ী সমিতি ভবনে হিমঘর মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক শেষে আগামী সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দেন আলু ব্যবসায়ীরা।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার নির্দেশ অনুযায়ী কিলো প্রতি ২৬ টাকা দরে কলকাতা-সহ সংলগ্ন বাজারগুলিতে আলু সরবরাহের ফলে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছিল আলুর দর। কিন্তু তার পরেও গত তিন চার দিন ধরে ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ় ও অসম সীমান্তে আলুর ট্রাক আটকে দিচ্ছে এ রাজ্যের পুলিশ। আলুবোঝাই ট্রাকের চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা ব্যবসা করতে পারছি না। হিমঘর থেকে আলু নামিয়ে তা বাজারে বিক্রি করতে পারছি না। এরই প্রতিবাদে আমরা বাধ্য হয়ে সোমবার রাত থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। আশা করছি রাজ্যের সরকার আমাদের অবস্থা বিবেচনা করে সোমবারের আগেই সদর্থক পদক্ষেপ করবে।’’ এখন দেখার, সরকার আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে কী পদক্ষেপ করে।