অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
স্কুল সার্ভিস কমিশনে ‘নিয়োগ দুর্নীতি’ মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার আবার কলকাতায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হাজির করানো হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি চলাকালীন বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায় পার্থ-অর্পিতা দু’জনকেই জানান, তাঁরা চাইলে কিছু বলতে পারেন। এ কথা শুনে বিচারকের উদ্দেশে অনেক কিছু বলতে শোনা যায় পার্থকে। কান্নায় ভেঙে পড়ে নিজের জামিনের জন্য আবেদন করতেও দেখা যায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। একই ভাবে, অর্পিতারও কিছু বলার আছে কি না, তা জানতে চান বিচারক।
আদালতে শুনানি চলাকালীন বিচারক ও অর্পিতার মধ্যে যা কথা হল...
বিচারক— আপনার কিছু বলার আছে?
অর্পিতা— আমার বাড়িতে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) ছিল। আমি নিজেও জানতে পারিনি। ওঁরা (ইডি আধিকারিকেরা) যে আমার বাড়িতে আছেন, সে ব্যাপারে আমার কোনও ধারণাই ছিল না। আমি বাথরুমে চার ঘণ্টা মতো ছিলাম। তার পর বেডরুমে ছিলাম। কী ভাবে যে কী হয়ে গেল, আমি কিছুই জানতে পারিনি। আমি সাধারণ পরিবারের মেয়ে। আমার মতো সাধারণ মানুষের বাড়িতে ইডি এ ভাবে যেতে পারে, এ ধারণা আমার ছিল না।
বিচারক— কোথাও আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে মনে করলে ইডি যেতে পারে। আপনার কী মনে হয়, ইডি আপনার বাড়িতে যেতে পারে না! আপনি মায়ের কাছে থাকতেন?
অর্পিতা— আমি দক্ষিণ কলকাতায় থাকতাম। মায়ের কাছে যেতাম। মা অসুস্থ।
বিচারক— টাকাটা কোথা থেকে পাওয়া গেল?
অর্পিতা— আমার বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে।
বিচারক— আপনি বাড়ির মালিক তো? টাকার ব্যাপারে কিছু জানা আছে আপনার?
অর্পিতা— টাকার ব্যাপারে আমার কোনও ‘আইডিয়া’ই নেই।
বিচারক— বাড়ি তো আপনার। আইনগত ভাবে আপনার জানা উচিত।
অর্পিতা— এটাই আমার প্রশ্ন।
বিচারক— কিসের ব্যবসা ছিল আপনার?
অর্পিতা— আমার ‘এন্টারটেনমেন্ট (বিনোদন) বিজনেস’। আমার সংস্থার নাম ‘ইচ্ছা এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’।
বিচারক— আপনি জামিনের আবেদন করবেন?
অর্পিতা— এ ব্যাপারে আমার আইনজীবী যা বলার বলবেন...
প্রসঙ্গত, বুধবারও অর্পিতার জামিনের আবেদন করেননি তাঁর আইনজীবী। তবে, পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ মডেল-অভিনেত্রীকে আবারও জেল হেফাজতে রাখার আবেদন করেন ইডির আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, তদন্তে ইতিমধ্যেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। শতাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে। সে ব্যাপারে অর্পিতাকে জেরা করা জরুরি বলেই আদালতে জানায় ইডি।