নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের। ছবি: সংগৃহীত।
নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। জুনিয়র চিকিৎসকেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার চাইছেন। কিন্তু সরকার তাতে রাজি হয়নি। সে কথাই সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন মুখ্যসচিব এবং ডিজি।
মুখ্যসচিব জানান, ৫টা থেকে নবান্নের সভাঘরে অপেক্ষা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। জুনিয়ক ডাক্তারেরা নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা পরে পৌঁছেছেন। তাঁদের ১৫ জন প্রতিনিধিকে আসতে বলা হয়েছিল। এসেছেন ৩২ জন। কিন্তু তাঁদের নবান্নে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। তবে একটি বিষয়ে সমস্যা রয়েছে। তাঁরা চাইছেন, বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার। যার কোনও প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করছে না সরকার।
রাজীব বলেন, ‘‘যে কোনও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার হয় না। এ ক্ষেত্রেও তার কোনও প্রয়োজনীয়তা আমি দেখতে পাচ্ছি না। ওঁদের অনেক বার বোঝানো হয়েছে। ১৫ জনকে আসতে বলা হয়েছিল। ৩২ জন এসেছেন। আমাদের খোলা মনে আলোচনার সদিচ্ছা রয়েছে বলেই অনুমতি দিয়েছি। আমাদের উচ্চপদস্থ কর্তারা কথা বলেছেন। কিন্তু ওঁরা রাজি হননি। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিকেল ৫টা থেকে এটার জন্য অপেক্ষা করছেন।’’
মুখ্যসচিব এবং ডিজির এই সাংবাদিক বৈঠকের পর বাইরে অপেক্ষারত চিকিৎসকেরাও সাংবাদিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন।
গত মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন রাজ্যের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন তাঁরা। পালন করছেন কর্মবিরতি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে চিকিৎসকদের কাজে ফেরার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার পরেও তাঁরা কাজে ফেরেননি। বরং ওই দিনই স্বাস্থ্য ভবন অভিযান করেন আন্দোলনকারীরা। সেই থেকে ধর্না চলছে। এর আগে পর পর দু’বার তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দু’দিন নবান্নে অপেক্ষা করে করে তাঁকে ফিরে যেতে হয়েছে। প্রথম থেকেই আন্দোলনকারীদের শর্ত ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার করতে হবে। তাঁরা ৩০ জন প্রতিনিধি নিয়ে নবান্নের বৈঠকে যোগ দেবেন। কিন্তু এই দুই শর্তেই আপত্তি করে সরকার। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় শর্ত মেনে নেওয়া হলেও প্রথম শর্ত নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। নবান্নের সামনে অপেক্ষায় আন্দোলনকারীরা। অনুমতি পেলেও ভিতরে প্রবেশ করেননি তাঁরা।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে এনআরএস হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে মমতার বৈঠক সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল। সে সময়েও রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তা হলে এ বারেও অনুরূপ বৈঠকের সম্প্রচার সম্ভব নয় কেন, প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।