১১ বছর আগে ম্যানহোলে মানুষ নামানো আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ভারতে। —ফাইল চিত্র।
বানতলায় লেদার কমপ্লেক্সে ম্যানহোলে নেমে সাফাইয়ের কাজ করতে গিয়ে পাঁকে ডুবে গিয়েছেন তিন শ্রমিক। তিন জনেরই মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাচক্রে, মাত্র চার দিন আগেই কলকাতা-সহ দেশের ছয় শহরে ম্যানহোলে মানুষ নামানোর কাজ বা ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং’ নিয়ে সতর্ক করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছয় শহরের প্রধান নির্বাহী কর্তাদের এ সংক্রান্ত হলফনামা জমা দিতে হবে আদালতে। রিপোর্টে বিশদ জানাতে হবে, কী ভাবে এবং কখন ‘ম্যানুয়াল স্ক্যাভেঞ্জিং’ বন্ধ করা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় পরবর্তী শুনানি। কিন্তু তার মাঝেই কলকাতার উপকণ্ঠে ট্যানারি এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে গেল।
ম্যানহোলে মানুষ নামানোর কাজ বন্ধ করতে ২০১৩ সালে দেশে নতুন আইন আনা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, ম্যানহোল সাফাই, মলমূত্র সাফাই কিংবা বয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ কোনও মানুষকে দিয়ে করানো যাবে না। আইনত তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কোনও বিশেষ পরিস্থিতিতে ম্যানহোলে মানুষ নামানোর প্রয়োজন হয়, তবে তাঁকে জীবন এবং স্বাস্থ্যের সব রকম সুরক্ষা দিতে হবে সরকারকে। এই আইন প্রণয়নের পরেও বার বার দেশের নানা প্রান্তে ম্যানহোলে নেমে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিশেষ পরিস্থিতিতে কখনও ম্যানহোলে মানুষ নামানোর প্রয়োজন হলে—
এ ছাড়া, ২০২৩ সালে এই সংক্রান্ত একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, নর্দমা পরিষ্কার করতে গিয়ে কোনও সাফাইকর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারকে।
২০২৩ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে ম্যানহোলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বাজেট বক্তৃতার ৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদে তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের প্রতিটি শহরে নিকাশি সংস্কারের কাজ পুরোপুরি আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে করতে হবে। বিজ্ঞানসম্মত ভাবে এই কাজ করতে সমস্ত রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন নির্মলা।
সাম্প্রতিক একটি হলফনামায় সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছে, দেশের ৭৭৫টি জেলার মধ্যে ৪৫৬টিতে সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে গিয়েছে ম্যানহোল কিংবা নর্দমায় নেমে সাফাইয়ের কাজ। তবে ওই হলফনামায় কিছু অসম্পূর্ণতা রয়েছে, মেনে নিয়েছেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল। তার পরেই নতুন করে হলফনামা চায় আদালত।