ভারতীয় ক্রিকেট দলের তারকা স্পিনার যুজবেন্দ্র চহাল এবং ধনশ্রী বর্মার বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। গত মাসে মুম্বইয়ে বান্দ্রার পারিবারিক আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল চহাল-ধনশ্রীকে। সেখানেই তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়।
যুজবেন্দ্র এবং ধনশ্রীর বিচ্ছেদের প্রায় তিন সপ্তাহ অতিক্রান্ত। তবে তার মধ্যেই এ বার নতুন এক রমণীর সঙ্গে নাম জড়াল তাঁর। রবিবার দুবাইয়ে ভারত-নিউ জ়িল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ চলাকালীন ওই রমণীর সঙ্গে যুজবেন্দ্রের ছবি-ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই জল্পনার আগুনে ঘি পড়ে।
ভারত-নিউ জ়িল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচের সময় নেটপ্রভাবী আরজে মহওয়াশের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা গিয়েছে ক্রিকেটার যুজবেন্দ্রকে। তার পরেই তাঁদের নিয়ে চর্চা শুরু হয়। সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসেন দু’জনে।
তবে এই প্রথম বার নয়, এই জুটিকে আগেও একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে, যুজবেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর একটি ছবি শেয়ার করেন মহওয়াশ। তখনও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল।
মহওয়াশের সঙ্গে যুজবেন্দ্রের উপস্থিতি কৌতূহল জাগিয়েছে ক্রিকেটারের অনুরাগীদের মধ্যে। নেটমাধ্যমেও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে ধনশ্রীর সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে কি তা হলে নতুন সম্পর্ক নিয়ে ভাবনাচিন্ত শুরু করেছেন ভারতীয় স্পিনার?
কিন্তু কে এই আরজে মহওয়াশ? মহওয়াশ এক জন জনপ্রিয় ইউটিউবার। মজার মজার ভিডিয়ো তৈরি করে এবং নেটপ্রভাবী হিসাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তিনি।
মহওয়াশের জন্ম আলিগড়ে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্নাতক হন তিনি। পরে নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণজ্ঞাপন নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
ইউটিউবার এবং নেটপ্রভবী হওয়া ছাড়াও মহওয়াশ জনপ্রিয় রেডিয়ো জকিও বটে। জনপ্রিয় একটি এফএম চ্যানেলে জকি হিসাবে তিনি কেরিয়ার শুরু করেন।
ইউটিউবে মজাদার এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে ভিডিয়ো তৈরির পাশাপাশি ভিডিয়োর মাধ্যমে নারী শক্তি এবং স্বাধীনতার প্রচার করতেও দেখা যায় মহওয়াশকে।
অনেক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিষয়স্রষ্টা (কন্টেন্ট ক্রিয়েটার) হিসাবে দৃষ্টি আকর্ষণের পর জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত রিয়্যালিটি শো বিগ বসে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন মহওয়াশ। এমনকি, বলিউডে অভিনয়ের প্রস্তাবও নাকি পেয়েছিলেন। কিন্তু দু’টি প্রস্তাবই তিনি ফিরিয়ে দেন বলে খবর।
সেই মহওয়াশের সঙ্গেই এ বার নাম জড়িয়েছে যুজবেন্দ্রের। যদিও তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে বলে জল্পনা তৈরি হতেই তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মহওয়াশ। স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের ওই দাবি ভিত্তিহীন। গোপনীয়তাকে সম্মান করার এবং কোনও ‘ভুয়ো খবর’ না ছড়ানোর অনুরোধও করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন যুজবেন্দ্রও। চহাল তাঁর অনুরাগীদের অনুরোধ করেছেন, এই ধরনের খবর না ছড়াতে, কারণ এই সব খবর তাঁর পরিবারকে কষ্ট দিতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের বিয়ে হয়েছিল যুজবেন্দ্র-ধনশ্রীর। কিন্তু পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাবে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন দু’জনেই। বিয়ের পাঁচ বছর পর আলাদা হয়েছেন তাঁরা। আদালত তাঁদের যুক্তি এবং আবেদনের ভিত্তিতে বিবাহবিচ্ছেদে সম্মতিও দিয়েছে।
১৮ মাস আলাদা থাকার পর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে চহাল এবং ধনশ্রীর। বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হওয়ার পর দু’জনেই সমাজমাধ্যমে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। কেউ কারও বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেননি।
সমাজমাধ্যমে জুটি হিসাবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন যুজবেন্দ্র-ধনশ্রী। বহু বার ধনশ্রীর সঙ্গে পা মেলাতে এবং কোমর দোলাতে দেখা গিয়েছে চহালকে। কিন্তু তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ক্রমাগত কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় ধনশ্রীকে। অর্থলোভী বলে কটাক্ষ করা হয় ধনশ্রীকে।
গত দেড় বছর ধরেই আলাদা থাকছিলেন যুজবেন্দ্র এবং ধনশ্রী। গুজব ওঠে, বিবাহবিচ্ছেদের সময় নাকি চহালের থেকে ৬০ কোটি টাকা খোরপোশ দাবি করেছিলেন নৃত্যপ্রশিক্ষক ধনশ্রী।
তবে সেই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিরক্তি প্রকাশ করে ধনশ্রীর পরিবার। স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ধনশ্রী এমন কোনও অর্থ নেননি। এমনকি চহালকে খোরপোশ সংক্রান্ত কোনও প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।