আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার ছাড়াও কি আর কেউ জড়িত? যদি অন্য কেউ জড়িতই থাকেন, তবে তাঁদের কবে গ্রেফতার করা হবে? কেন খুন করা হয়েছিল ওই চিকিৎসককে? সিবিআইয়ের থেকে এখন এই প্রশ্নেরই উত্তর পেতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আর সেই প্রত্যাশা নিয়েই তাঁরা তাকিয়ে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানির দিকে। তাকিয়ে রয়েছেন, শুনানিতে এই নিয়ে সিবিআই কী জবাব দেয় জানার জন্য। একই ভাবে, রাজ্যের বক্তব্য শুনতেও মুখিয়ে রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আরজি কর হাসপাতালে নির্যাতনের বিচারের দাবি তোলার পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা, ভয়শূন্য পরিবেশ তৈরির দাবিতেও প্রতিবাদ করছেন তাঁরা। রাজ্যের হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে, তা-ও জানতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।
আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে শুরু হতে চলেছে আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানি। সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসক থেকে শুরু করে গোটা দেশ। ঘটনার তদন্ত নিয়ে সিবিআই বা হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যের কাছে কী প্রত্যাশা রয়েছে তাঁদের, সে কথাই স্পষ্ট করে দিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘সিবিআই যে তদন্ত করছে, তাতে এই ঘটনায় কারা জড়িত, নির্যাতন এবং খুনের মোটিভ কী ছিল, তা কি উঠে এসেছে? অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার কি একাই জড়িত ছিলেন? আরও কেউ জড়িত থাকলে তাঁরা কবে গ্রেফতার হবেন? কেন হল এই ঘটনা? ঘটনার মোটিভ কী? এ সব শুনানিতে উঠে আসবে বলে আমাদের আশা।’’
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। ওই দিন থেকেই বিচার এবং সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন তাঁরা। দীর্ঘ আন্দোলনের পর রাজ্যের আশ্বাসের পর কর্মবিরতি তুলে নেন তাঁরা। যদিও জানিয়ে দেন, তাঁদের আন্দোলন চলবে। রাজ্যে হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তা নিয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে কী বলে, এখন তা জানতে চাইছেন আন্দোলনকারীরা। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজে ‘হুমকির সংস্কৃতি’ চলার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে কমিটি গঠন নিয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে কী জানায়, তা-ও দেখতে চান আন্দোলনকারীরা। সরকারি হাসপাতালে মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচালয়, কাজের ভয়শূন্য পরিবেশ গঠন নিয়ে রাজ্য কী পদক্ষেপ করছে, তা-ও জানতে চান চিকিৎসকেরা।
শুধু জুনিয়র চিকিৎসক নন, এমবিবিএস পড়তে যখন মেডিক্যাল কলেজে প্রবেশ করেন পড়ুয়ারা, তখন তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়েছেন। এ সব নিয়ে রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তার উত্তর মিলবে বলে আশা পড়ুয়াদের। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, জুনিয়র ডাক্তারদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে। এই নিয়ে রাজ্যের পদক্ষেপও জানতে চায় তারা।
সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ও তাদের নির্দেশের পরেও রাজ্যের সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এই আবহে রাজ্য কী ভাবছে, সে দিকেও নজর চিকিৎসকদের। আন্দোলনকারী চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের তদন্তের অগ্রগতি কী হয়েছে, অপরাধের মোটিভ কী ছিল, অভিযুক্ত একা ছিল, নাকি আর কেউ ছিল সঙ্গে? এগুলো জানতে চাইছি। রাজ্য আমাদের কনফিডেন্সে বিল্ডিংয়ের জন্য কী করেছে, টাস্ক ফোর্স বা নিরাপত্তার জন্য কী করেছে, তা-ও জানতে চাইছি।’’