Jhalda Municipality

বিরোধী কাউন্সিলরদের কোর্টের রক্ষাকবচ, নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ করল প্রশাসন

শুক্রবার দিনের শুরুটা অবশ্য কংগ্রেসের পক্ষের ভালই ছিল। ঝালদার বিরোধী ছয় কাউন্সিলরকে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রক্ষাকবজ দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝালদা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:২৯
Share:

ঝালদার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জবা মাছোয়ার চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করবেন।

বিরোধীদের পুরপ্রধান নির্বাচনের ঠিক আগের দিনই, শুক্রবার ঝালদায় চেয়ারম্যান নিয়োগ করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, যতদিন না ঝালদায় নতুন পুরপ্রধান নির্বাচন হচ্ছে, ততদিন ঝালদার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জবা মাছোয়ার চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করবেন। তিনি তৃণমূলের কাউন্সিলর। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দা বলেন, ‘‘ঝালদায় এক কাউন্সিলরকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে বলে রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশিকা এসেছে।’’ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঝালদার পুরপ্রধান ২১ নভেম্বর অপসারিত হন। ২৮ নভেম্বর পদ থেকে ইস্তফা দেন উপপুরপ্রধান। সে কারণে পুর-আইন অনুযায়ী জবাকে আপাতত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

এর বিরোধিতা করে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘এ রকম একটা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পুর-আইন মেনেই আমরা পুরপ্রধান নির্বাচনের সভা ডেকেছি। ওই সভা শনিবার নির্ধারিত সময়েই হবে। দলের পাঁচ ও দুই নির্দল কাউন্সিলর ওই বৈঠকে যোগ দেবেন। প্রয়োজনে আইনের দ্বারস্থ হব।’’ কংগ্রেস কাউন্সিলরদের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী বলেন, ‘‘এটা বেআইনি পদক্ষেপ। সরকারের এক স্বৈরাচারী পদক্ষেপে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।’’

যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘পুরপ্রধান অপসারিত হওয়ার পরে উপপুরপ্রধান যেহেতু পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন, তাই পুরসভায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। যা হচ্ছে, তা নিয়ম মেনেই হচ্ছে।’’ ঝালদার সদ্য প্রাক্তন পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘আইন আমি ভালই জানি। প্রথম থেকে যা বলে এসেছিলাম, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে সেটাই হল।’’

Advertisement

শুক্রবার দিনের শুরুটা অবশ্য কংগ্রেসের পক্ষের ভালই ছিল। ঝালদার বিরোধী ছয় কাউন্সিলরকে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রক্ষাকবজ দেন। মামলাকারীদের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী দাবি করেন, ‘‘ঝালদার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ঠেকাতে তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ বিরোধী কাউন্সিলরদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে ঢোকানোর ছক কষছে বলে আশঙ্কা করে আদালতের কাছে তাঁদের রক্ষাকবজের জন্য আর্জি জানানো হয়েছিল। বিচারপতির নির্দেশ, ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না।’’ যদিও তৃণমূল ও পুলিশ অভিযোগ মানেনি।

১৩ অক্টোবর ঝালদার তৃণমূল পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন বিরোধী কাউন্সিলরেরা। পরে পুরনো একটি মামলায় কংগ্রেস কাউন্সিলর পিন্টু চন্দ্র পুলিশের নির্দেশে থানায় হাজিরা না দেওয়ায় তাঁকে সাক্ষী থেকে আসামি করে পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতারের তোড়জোড় শুরু হলে পিন্টু-সহ বিরোধী সাত কাউন্সিলর রক্ষাকবজের আর্জি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। পিন্টুকে আগেই ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্ষাকবজ দেয় হাই কোর্ট। এ বার কংগ্রেসের চার জন এবং দুই নির্দল কাউন্সিলরের জন্যও একই নির্দেশ মিলল।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপালের দাবি, ‘‘অনাস্থা ভেস্তে দিতে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী কাউন্সিলরদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে ঢোকানোর চেষ্টা শুরু করেছিল তৃণমূল। আদালত বিরোধী কাউন্সিলরদের রক্ষাকবজ দিয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেনের দাবি, ‘‘আমরা নোংরা রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। পুলিশের কাজ পুলিশ করে। দল সেখানে হস্তক্ষেপ করে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement